শঙ্কু সমগ্র by Satyajit Ray


শঙ্কু সমগ্র
Title : শঙ্কু সমগ্র
Author :
Rating :
ISBN : 8177562320
ISBN-10 : 9788177562323
Language : Bengali
Format Type : Hardcover
Number of Pages : 648
Publication : First published January 1, 2002

প্রফেসর শঙ্কু কে? তিনি এখন কোথায়? এটুকু জানা গেছে যে তিনি একজন বৈজ্ঞানিক।

কেউ কেউ বলে তিনি নাকি একটা ভীষণ পরীক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। আবার এও শোনা যায় যে তিনি কোনো অজ্ঞাত অঞ্চলে গা ঢাকা দিয়ে নিজের কাজ করে যাচ্ছেন, সময় হলেই আত্মপ্রকাশ করবেন।


শঙ্কু সমগ্র Reviews


  • Aishu Rehman

    হাল্কা মোচড় খাওয়া গোঁফ, গালের দু’পাশ বেয়ে ইঞ্চি দুয়েক পুরু সাদা দাড়ি, ব্রহ্মতালুর সামনে চকচকে টাক আর চোখের পাতলা স্বচ্ছ চশমা – এগুলি বলে দিলেই বাঙালি পাঠকমন চরিত্রটিকে চিনে নিতে ভুল করবে না। সঙ্গে যদি একটি বেড়াল থাকে যার নাম নিউটন তবে তো আর কথাই নেই। হ্যাঁ , তিনি আর কেউ নন , আমাদের সবার প্রিয় শঙ্কু। বই পড়েন অথচ এই প্রফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুকে চেনে না-- বাংলাভাষী এমন কোনো পাঠক আদৌ আছেন কি না সন্দেহ!

    আমাদের প্রিয় ‘প্রোফেসর শঙ্কু’, যার ডায়েরি খুঁজে পেয়েছিলেন তারকবাবু। পেয়ে দিয়েছিলেন ‘ফেলুদা’ অমর চরিত্রস্রষ্টা সত্যজিৎ রায়কে। সেই শুরু। রায়বাবুর সেই ডায়েরি এতই ভালো লেগে গেল যে ১৯৬১ সালে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় তা ধারাবাহিকভাবে ছেপে দিলেন তিনি। নাম ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়েরি’ - এক আশ্চর্য মহাকাশ ভ্রমণের কাহিনি। প্রথম শঙ্কু-কাহিনিই জয় করে ফেলেছিল অগুনতি বাঙালি কিশোর-কিশোরীর মন। এতটাই করে ফেলেছিল যে সেদিনের কিশোর-কিশোরীরা যারা আজ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা হয়ে গেছেন, আজও শঙ্কু-ফ্যান হয়ে আছেন। ১৯৬১-এর পর শঙ্কুর যাত্রা আর থেমে থাকল না। সত্যজিৎ রায় খুঁজে পেলেন আরও ২১টি ডায়েরি যার উল্লেখ রয়েছে একটি গল্পে। কিন্তু জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়ে গেছিল যে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত লিখতে হল মোট আটত্রিশটি সম্পূর্ণ শঙ্কু-কাহিনি। লেখকের মৃত্যুর পরও ‘আনন্দমেলা’ পূজাবার্ষিকীতে বেরোল দুটি অসম্পূর্ণ শঙ্কু-অভিযান। নামগুলি হল ‘ইন্টেলেক্ট্রন’ এবং ‘���েক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা’।

    কল্পবিজ্ঞান মানেই শুধু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিজ্ঞান কপচানো সাহিত্য হবে সে ধারণা বাংলা সাহিত্যে শঙ্কু ভেঙে দেয়। শুরু করে কল্পবিজ্ঞানের আরেকটি দিক – কল্পনার বিজ্ঞান, যা সাধারণ পাঠককে আরও ভাবতে শেখায়, শিশু-কিশোর-কিশোরীদের মনের বন্ধ জানালাগুলি খুলে দেয়। তাদের মানবিকতার নৈতিক শিক্ষাও দেয় সত্যজিতের ‘প্রোফেসর’। ‘ব্যাঙের ছাতা সাপের খোলস আর কচ্ছপের ডিম’ দিয়ে মহাকাশযানের কম্পাউন্ড বানানো ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু হয়তো বিশেষজ্ঞদের মন ভরাবে না, কিন্তু আমার মতো বিশেষভাবে অজ্ঞ পাঠকদের মন এতটা ভরিয়ে দেয় যে তা উপচে পড়ে। আমার বিশ্বাস, তোমাদেরও ভরাবে।

    শঙ্কু কাহিনি শুধুমাত্র কল্পবিজ্ঞান সাহিত্য হিসেবেই স্বীকৃতি পায়নি, এগুলি একেকটি দারুণ ভ্রমণকাহিনিও বটে। শঙ্কুর অভিযান শুধুমাত্র ভারতবর্ষেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, পাড়ি জমিয়েছে জার্মানি, ইজিপ্ট, আফ্রিকা, তিব্বত সহ আরও অনেক দেশে। মানিকবাবুর মানিকঝরা হাতে জায়গাগুলি হয়ে উঠেছিল জীবন্ত। অথচ ভাবলে অবাক লাগে লেখক কোনওদিন ঐ জায়গাগুলিতে যাননি।

    শঙ্কুর ডায়েরি এরকমভাবে লেখা, যদি তোমার একটা জিনিস ভালো না লাগে তো তুমি পেয়ে যাবে অন্য এক ভালো লাগা। সেটা না লাগলে হয়তো তোমার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে তোমার মনমাতানো অন্য এক টুইস্ট। সত্যজিৎ রায় খুব ভেবেচিন্তেই এতসব আকর্ষণ রেখেছিলেন। আর সেই আকর্ষণগুলির অন্যতম হল শঙ্কুর আবিষ্কৃত বৈজ্ঞানিক অস্ত্র বা গ্যাজেটগুলি। অ্যানাইহিলিন, মিরাকিউরল, নার্ভিগার, অমনিস্কোপ, স্নাফগান, ক্যামেরাপিড, লিঙ্গুয়াগ্রাফ - আরও কত শত ক্রিয়েটিভ নাম সেইগুলির। যেমন নাম, ঠিক তেমনই কাজকম্ম। এই যেমন অ্যানাইহিলিন পিস্তল যেটা শঙ্কু সবসময় তার সাথে রাখত, সেটা দিয়ে গুলি করলে যে কেউ অদৃশ্য হয়ে যায়। মিরাকিউরল যার পুরো নাম ‘মিরাকল কিউর ফর অল কমপ্লেন্টস’ হল সর্বরোগ হন্তারক। স্নাফ গান বা নস্যাস্ত্র দিয়ে কাউকে গুলি করলে সে পুরো চব্বিশ ঘণ্টা হেঁচে মরবে। অমনিস্কোপ যন্ত্র একাই টেলিস্কোপ, মাইক্রোস্কোপ এবং এক্স-রে এই তিন জিনিসের কাজ করে। এরকম রয়েছে আরও কত গ্যাজেট। কিছু বললাম, বাকিগুলো তোমরা পড়ে দেখবে আর আশ্চর্য হবে।

    স্বল্প পরিসরে ত্রিপুরেশ্বর শঙ্কুপুত্র ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুকে ধরা চাট্টিখানি কথা নয় আবার যেখানে সব পাঠকই বাঙালি, যার সাথে শঙ্কুর নাড়ির টান স্পষ্ট। তাই না চাইলেও শেষ করতেই হচ্ছে। একটা ঘটনা বলে শেষ করছি। তখন শঙ্কু-কাহিনির সংখ্যা ত্রিশ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিবছর আনন্দমেলা, সন্দেশ দুটো পত্রিকার জন্যেই সত্যজিৎবাবুকে লিখতে হচ্ছে শঙ্কু-অ্যাডভেঞ্চার। সঙ্গে চলছে ফেলুদার কাণ্ডকারখানার জমাটি উপন্যাস। ছোটোগল্পও লিখতে হচ্ছে ফাঁকফোকরে। পাশাপাশি বহুমুখী প্রতিভাধর লেখককে করতে হচ্ছে ইলাস্ট্রেশন, চলচ্চিত্রকার হিসেবেও চলছে তাঁর মূল পেশা। এই করে করে তিনি ক্লান্ত। বয়সও তখন অনেক। কিন্তু এত অনুরোধ আসছে যে সবকিছুর পাশাপাশি লেখা চালিয়ে যেতেই হচ্ছে। তিনি সত্যজিৎ রায়। লেখার মান নিয়ে কোনওপ্রকার কম্প্রমাইজে যিনি একদমই রাজি নন।

    সেরকম একদিনে পুত্র সন্দীপ রায়কে ডেকে বললেন, “ভাবছি, শঙ্কুটাকে মেরে ফেলব।” সন্দীপবাবু তাঁর বাবার ক্লান্ত মুখটার দিকে কিছুক্ষণ হতবাক হয়ে চেয়ে রইলেন। তারপর বললেন, “শঙ্কু তো অমর, মিরাকিউরল আছে না।”
    সম্বিৎ ফিরল লেখকের। “ঠিক ঠিক, শঙ্কু তো অমর।”


    সত্যি, বাংলা সাহিত্যে শঙ্কু আজও অমর। ভবিষ্যতেও থাকবে। চলবে এরকম আরও লেখালিখি। উঠবে আরও গুঞ্জন। বইমেলায় বাড়বে শঙ্কুর কাটতি। নতুন প্রজন্ম সামিল হবে কল্পনায় ‘ব্যোমযাত্রী’র সঙ্গী হতে। আর আমি, আমরা যারা ছিলাম, হাত বাড���াব তাদের দিকে।

  • Farhan

    সত্যজিৎ রায়ের সবচেয়ে বিখ্যাত তিনটি চরিত্র--ফেলুদা, প্রোফেসর শঙ্কু এবং তারিণীখুড়ো--এর মাঝেই তাঁর নিজের ছায়া দেখা যায়, যদি তাঁর সাক্ষfৎকারগুলো পড়ি, এবং তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের স্মৃতিচারণ ও জীবনীমূলক লেখাগুলোকে নির্ভরযোগ্য হিসেবে ধরি। তাঁর প্রটাগনিস্টরা স্বাধীনচেতা, নিজের কাজটা দারুণ ভাল বোঝেন, নিজের মত থাকতে ভালবাসেন, প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী যেটা অচেনাজনদের কাছে খানিকটা রূঢ় এবং অহঙ্কারী ঠেকলেও পরিচিতজনদের কাছে শ্রদ্ধার ব্যাপার বলেই বোধ হয়। এঁরা নানা কাজে পারদর্শী, ঘুরে বেড়াতে ভালবাসেন আর সেই ঘোরাঘুরির মাঝেই নানা রকম অ্যাডভেঞ্চারের খোঁজ পেলে লেগে পড়েন সেটার পেছনে। খুবই ব্যক্তিত্ববান, বলাই বাহুল্য, তবে একান্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব বা স্নেহের পাত্রদের সামনে সেই ব্যক্তিত্বের মুখোশ খুলে আন্তরিক মানুষটাও বের হয়ে আসে। মিলছে সত্যজিতের সাথে, অন্তত আমরা বইপত্র পড়ে তাঁকে যেমনটা চিনি? চিরজীবনের কাজপাগল মানুষটা, পৃথিবীজোড়া নামডাক, কিন্তু সেটা নিয়ে ব্যস্ত না থেকে নিজের কাজের মাঝেই ডুবে ছিলেন আমৃত্যু, স্বীকৃতির ধার না ধারলেও সেটা ধরা দিয়েছে আপনিই।

    প্রোফেসর শঙ্কুও কিন্তু তাই। নিভৃতচারী বৈজ্ঞানিক, নিজের গবেষণার কাজে বাধা এলে বেশ বিরক্তই হন, তবে উপভোগ করেন প্রিয় বন্ধু ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক জেরেমি সন্ডার্স, জার্মান বৈজ্ঞানিক উইলহেলম ক্রোল এবং আরেক ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক জন সামারভিলের সঙ্গ। মাঝে মাঝেই তাই তাদের সাথে বেরিয়ে পড়েন নানা অভিযানেও। স্নেহের পাত্র বিড়াল নিউটন, বাসার কাজের লোক প্রহ্লাদ আর অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী নকুড়বাবু। প্রতিবেশী অবিনাশবাবুর সাথে সম্পর্কটা আবার অম্ল-মধুর। কোন কাজে কেউ এলে বা সাহায্যপ্রার্থী এলে তাকে ফেরান না, তবে খাজুরে আলাপের সময় যে তার নেই সেটাও জানিয়ে দেন। গবেষণা আর আবিষ্কারেই আনন্দ, স্বীকৃতি পেলে খুশি হন, তবে না পেলেও সেটা নিয়ে হা-হুতাশ নেই, বরং স্বীকার করে নেন যে, নতুন যুগের বৈজ্ঞানিকরা আরো ভাল ভাল কাজ করছে, তিনি সীমিত সামর্থ্যের মাঝে যা করতে পারছেন তাতেই সন্তুষ্ট। অর্থলোভ নেই একেবারেই, সেজন্য আবিষ্কারগুলো দিয়ে ব্যবসাও করেন না। সারা দুনিয়ার লোক তাঁকে একনামে চিনলেও নিজের দেশে তিনি যে তেমন একটা স্বীকৃতি পাচ্ছেন, বা তাঁর কাজ সম্পর্কে লোকজনের তেমন কোন ধারণা আছে, সেটা তাঁর ডায়েরি পড়ে মনে হয় না। মোটের উপর যেন বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়কেই আমরা দেখছি এখানে।

    শঙ্কুর গল্প বা উপন্যাসগুলোকে সে অর্থে সাই-ফাই বলা চলে না, বরং ফ্যান্টাসি অ্যাডভেঞ্চার ধারার সাথেই তার মিল বেশি। সে সময় লেখা শঙ্কুর বেশ কিছু আবিষ্কার অবশ্য প্রায় ৫০ বছর পরে আজ বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে, সেদিক দিয়ে আমি একে জুলভার্নের লেখার সাথে তুলনা করবো। প্রোফেসর শঙ্কু নানারকম আবিষ্কার করেন, এবং পৃথিবীর নানা প্রান্তে বিভিন্ন অভিযানে জড়িয়ে পড়েন যেখানে তাঁর আবিষ্কার, দৃঢ়তা, বুদ্ধিমত্তা এবং বন্ধুদের সাহায্যে সেসব অভিযানে সফল হন। তাঁর প্রতিপক্ষের মাঝে বিপথগামী লোভী বৈজ্ঞানিক, কোটিপতি ধনকুবের, অভিযাত্রী, ভাগ্যান্বেষী সবই আছে। গল্পগুলো তো অবশ্যই সত্যজিতের লেখনীর গুণে আকর্ষণীয়, কিন্তু তারচেয়েও আকর্ষণীয় শঙ্কু এবং তাঁর সাথের চরিত্রগুলো। সিনেমা বানাতেন বলেই কিনা, সত্যজিতের ক্যারেক্টার বিল্ডআপ এবং তার চিত্রায়ণ দুর্দান্ত, পড়তে পড়তে মনে হয় তাঁর চরিত্রগুলোর সাথে আমরাও হেঁটে চলেছি। সত্যজি�� ভক্তদের শঙ্কু না পড়ার কোন কারণ নেই, তবু যদি এখনো কেউ 'হালকা লেখা' ভেবে না পড়ে থাকেন, বা সবগুলো না পড়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে আমার ঈর্ষা হচ্ছে, কারণ শঙ্কু সমগ্রতে প্রোফেসর শঙ্কুর সাথে আপনার দারুণ একটা ভ্রমণ অপেক্ষা করছে। আর হ্যাঁ, ফেলুদা'র মতই প্রোফেসর শঙ্কু'র প্রথম গল্পটা একটু ছেলেমানুষী, কিন্তু এরপর থেকেই একেবারে বদলে গেছেন শঙ্কু; কাজেই প্রথম গল্প 'ব্যোমযাত্রীর ডায়েরী' পড়েই কেউ 'দুত্তোর' বলে রেখে দিলে নিশ্চিত ঠকে যাবেন।

    ৫ তারা যে দিতেই হবে, সেটা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই।

  • Dyuti

    Bengali Science Fiction at its best.

    Created by the literary genius Satyajit Ray, Professor Shonku is primarily an inventor rather than a scientist engaged in a specific field (much like Edison). He is quite a prodigy, having a double honours in Physicss and Chemistry, and being able to fluently converse in 69 languages. Yet the man within is quite like any other middle class erudite Bengali. He lives with his 24 year old cat Newton, and a forgetful man-servant, Prahlad.

    With his inventions, he visits many science conferences around the world, or goes out for scientific expeditions, where he gets caught up in mysterious dealings and crimes. With the help of his wit and inventions, and sometimes with the help of his friends Somerset, Saunders and Kroll, he helps to establish the truth. Yet the stories never tend to become preachy. On the contrary, the adventures, and the fast pace makes them complete page-turners.

    Each story is written in the form of a diary entry -- the format was such a novelty in Bengali literature at the time of it's publication, that it made the reader actually consider the possibility whether Shonku was indeed a lving person. Prrimarily targeted for young adults, another great aspect of this series is that you can learn so much about the different cultures of the world, which can be really great for a teen, who seeks information along with the thrill of a good story.

    It is one of those books which shaped my growing up years and will forever be close to my heart! 5/5 stars!

  • Saiful Sourav

    Dear Professor Shonku,
    Thank you for your crazy science experiments & adventures. And I want you in heaven (though I don't know if there's any).
    প্রফেসর শঙ্কুর পোষা বেড়াল নিউটনটাকে মনে পড়লে বিজ্ঞানী নিউটনের একটা গল্প মনে পড়ল। ব্যক্তিগত গবেষণার ঘরে কাজ করার সময় বিজ্ঞানী নিউটন কাউকে ঢুকতে দিতেন না। পোষা বেড়াল দরজায় দাঁড়িয়ে মিঁয়াও মিঁয়াও করতে থাকলে দেখলেন তাতে কাজে আরো ব্যাঘাত বেশি হচ্ছে। তাই বেড়ালটার ঘরে ঢোকার জন্য দেয়ালের এক কোনায় একটা ফুটো করলেন। তাতে বিরক্তি উৎপাদন বন্ধ হলো। কিছুদিন পর বেড়ালটা একগাদা বাচ্চা দিলো। বিজ্ঞানী নিউটন ভাবলেন এত্তোগুলা বাচ্চা যেহেতু বেড়ালটার সাথে ঘরে ঢুকবে তাই বাচ্চাদের জন্যও দেয়ালে ছোট ছোট ফুটো করলেন। কিন্তু সবগুলো বেড়াল একটা ফুটো দিয়েই ঘরে যাতায়ত করতে থাকলো।
    প্রফেসর শঙ্কু এমনসব জিনিস বানাতো আর এমনসব অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ত, সে বয়সে যে শিহরণ কাজ করত, তাতেই মনে করি শিশুতোষ ফিকশনের জন্য সত্যজিৎ রায় একদম- বৈশ্বিক বিধাতা!

  • Azmain Tur Haque

    মাথার সামনের দিকে টাক, পিছনে কয়েকগোছা সাদা চুল। গোলফ্রেমের মোটা কাঁচের চশমা চোখে, থুতনিতে সাদা দাঁড়ি। তিনি মানুষটা দেখতে হয়ত ছোটোখাটো আত্মভোলা, কিন্তু মাথা তার একেবারে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’! টমাস আলভা এডিসনের পরে ইতিহাসের সবচে বড় উদ্ভাবক তিনি। অদ্ভুত অদ্ভুত সব আবিষ্কারের মালিক, যেগুলোর নাম আরও অদ্ভুত- অ্যানাইহিলিন, রিমেমব্রেন, মিরাকিউরল, লিঙ্গুয়াগ্রাফ আরও কত কি! অ্যানাইহিলিন যেকোনো জিনিসকে এক মুহূর্তে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে; দুনিয়ার এমন কোন অসুখ নেই যা মিরাকিউরল-এ সারে না। লিঙ্গুয়াগ্রাফ যন্ত্র যেকোনো ভাষাকে বোধগম্য করে তোলে, আর রিমেমব্রেন ব্যবহার করা হয় স্মৃতিউদ্ধারের কাজে!
    এই দুনিয়াখ্যাত আবিষ্কারক কিন্তু একজন বাঙালী, থাকেন বিহারের গিরিডিতে। কলকাতার স্ক���িশ চার্চ কলেজের বিজ্ঞানের অধ্যাপক- প্রফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু!
    সত্যজিৎ রায়ের এক অনন্য সৃষ্টি প্রফেসর শঙ্কু। ১৯৬১ সালে সত্যজিৎ প্রথম শঙ্কু-কাহিনি লেখা শুরু করেন, তারপর আর থামেননি; টানা লিখে গেছেন বিরানব্বই পর্যন্ত, মৃত্যু এসেই তাকে থামায়। শঙ্কুকে নিয়ে মোট গল্প চল্লিশটা, যার শেষ দুটা অসম্পূর্ণ। গল্পগুলো সবই লেখা হয়েছে ডায়েরির আকারে। সবগুলো গল্প একবারে পাওয়া যায় ‘শঙ্কুসমগ্র’ বইটাতে। ঢাউস আকৃতির এক বই, ৬৪৪ পৃষ্ঠার। কিন্তু একবার শঙ্কুর অভিযানে মজে গেলে বই শেষ করেও আফসোস করা লাগে- বড় তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলো!
    প্রফেসর শঙ্কুর গল্পগুলোকে কোন নির্দিষ্ট জাতের বলা চলে না। এদের বলা যেতে পারে সায়েন্স ফিকশন, আবার বলা যাবে এডভেঞ্চারের গল্পও; ভ্রমণঅভিযানের আদলে রহস্য গল্প বললেও কি ভুল হবে! না, কোন প্রজাতিভুক্ত না করাই ভালো, এগুলো শুধুই শঙ্কু-কাহিনি হয়েই থাকুক।
    সারাজীবন বিজ্ঞানী বলতেই চোখে ভেসে ওঠে ঘরকুনো এক পাগলাটে বুড়োর ছবি, যার স্বর্গ হল তার ল্যাবরেটরি, আর যার ভ্রমণ মানে বিকালে একটু নদীর তীরে হাঁটাহাঁটি। শঙ্কু পড়তে গিয়ে ভীষণভাবে ভেঙে যাবে এ ধারণা। সারাবছর শঙ্কু বিলেত-আমেরিকা করে বেড়ান; কখনো তিব্বতে যান, কখনো যান মিশরের মরুভূমিতে। মাঝে মাঝে তো মহাসাগরের তলে আর মহাকাশেও ঘুরে আসেন। অধিকাংশ অভিযানেই তার সাথে থাকেন তার প্রিয় দুই বন্ধু- ইংরেজ বিজ্ঞানী জেরেমি সণ্ডারস আর জার্মান উদ্ভাবক ক্রোল। আরও কিছু চরিত্র ঘুরে ফিরে সত্যজিৎ বিভিন্ন গল্পে নিয়ে এসেছেন- গিরিডির নকুলবাবু, যিনি খুব সহজেই যে কারো অতীত বলে দিতে পারেন প্রথম দেখাতেই, যিনি কল্পনার বিভিন্ন বস্তুর অবয়ব তৈরি করে ফেলেন বাস্তবে। আরও আছেন অবিনাশ মজুমদার, শঙ্কুর প্রতিবেশি, যিনি তার বিভিন্ন উদ্ভট আর বোকামির কাজ করে প্রফেসরকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখেন। প্রায় প্রতিটি গল্পেই এসেছে চাকর প্রহ্লাদ আর শঙ্কুর আদরের বিড়াল নিউটন।
    মজার কথা হল ‘শঙ্কুসমগ্র’ বইয়ের প্রথম গল্প ‘ব্যোমযাত্রীর ডায়রি’ শঙ্কুর ডায়েরিগুলোর শেষ কিস্তি। এখানেই তিনি বলছেন তার মঙ্গলগ্রহ অভিযানের পরিকল্পনার কথা, তার বানানো যন্ত্রমানব বিধুশেখর এর কথা, যাকে তিনি আবার বাংলাও শিখিয়েছেন। অতঃপর ভারতবর্ষের খ্যাতিমান বিজ্ঞানী প্রফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু উধাও হলেন, চলে গেলেন লাল মঙ্গলে। সেখান থেকে এক উল্কার সাহায্যে তিনি তার ডায়েরি পাঠিয়ে দেন পৃথিবীতে, একেবারে সুন্দরবনে এসে সে উল্কাপতন হল। সেই ডায়েরিই ঘটনাক্রমে লেখকের হাতে এসে পড়লে তিনি তা নিয়ম করে ছাপতে থাকেন ‘সন্দেশ’-এ!
    শঙ্কু কাহিনি গুলোতে একই সাথে আসে ভূগোলের সত্যি, বিজ্ঞানের তথ্য আর প্রকৃতির রহস্য। অধিকাংশ বিজ্ঞানীর মত শঙ্কু মোটেই বস্তুবাদী নন। আধ্যাত্মিক বিষয়আশয়ে তার আছে প্রচুর জ্ঞান আর আগ্রহ। এর প্রমাণ মেলে ‘নেফ্রুদেত এর সমাধি’, ‘শঙ্কুর পরলোকচর্চা’, ‘প্রফেসর শঙ্কু ও ভূত’-এর মতো গল্পগুলোতে।
    ‘শঙ্কুসমগ্র’ বইয়ের অধিকাংশ গল্পই খুব মজার, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত টানটান। তবে ব��শেষভাবে কয়েকটার কথা বলতেই হয়- ‘একশৃঙ্গ আভিযান’-এ শঙ্কু তার দলবল নিয়ে চলে যান তিব্বতে, ইউনিকর্নের খোঁজে; ‘আশ্চর্য প্রাণী’ গল্পে এসেছে ভবিষ্যৎ মানুষের কথা। ‘নকুড়বাবু ও এল ডোরাডো’-তে নকুড়বাবুকে নিয়ে শঙ্কু বের হন কিংবদন্তীর স্বর্ণশহর এল ডোরাডো অভিযানে। ‘মরুরহস্য’-এর পটভূমি মিশর, প্রফেসর ইজিপ্টের মরুভূমিতে খুঁজে বেড়ান এক হারিয়ে যাওয়া বিজ্ঞানী-কে। বইয়ের সবচে বড় গল্প ‘স্বর্ণপর্ণী’, আমার সবচে প্রিয় গল্পও এটাই। এটাকে বলা চলে প্রফেসর শঙ্কুর আত্মজীবনী, তার শৈশব থেকে যৌবনের গল্প। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক টুকরো ছবি আছে এ গল্পে।
    সবচে কষ্ট হয় বইয়ের শেষ দুইটা গল্প-‘ইনটেলেকট্রন’ আর ‘ডেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা’-এ দুটো অসম্পূর্ণ গল্প পড়তে গিয়ে। মনে হয়-ইশ!যদি এ দুটোও শেষ করে যেতে পারতেন, আরও কিছু চমৎকার সময় কাটত!
    বইটা শেষ করে একটা খটকা লেগেছে- শঙ্কুর জন্মদিন নিয়ে। ‘স্বর্ণপর্ণী’ গল্পে ১৬ জুন এর ডায়েরিতে শঙ্কু বলছেন- “আজ আমার জন্মদিন”; কিন্তু ‘ডেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা’-য় আবার ১৬ অক্টোবরে লিখছেন আজ আমার পঁচাত্তর পূর্ণ হল। অবশ্য তার মত মানুষের ক্ষেত্রে বছরে দুইটা জন্মদিন পালন কোন ব্যাপারই না!
    শঙ্কু পড়তে পড়তে বারবার শ্রদ্ধা জাগে সত্যজিৎ রায়ের সৃজনশীলতার প্রতি, একটা মানুষের মাথায় এত কিছু আঁটত কী করে! ‘শঙ্কুসমগ্র’ প্রধানত কিশোরসাহিত্যের তকমাধারী হলেও, সব বয়সের পাঠকদেরই ভালো লাগার মত একটা বই। যারা কিশোরবেলায় এ বই পড়েছেন, তারা বড় হয়ে গেলেও অবসরে নিশ্চয়ই মাঝেমধ্যে সেই পুরনো শঙ্কুর অভিযানগুলোতে সঙ্গী হতে চাইবেন! এ বই তাই বারবার পড়ার...

  • শালেকুল পলাশ

    সত্যজিতের সব গুলো বই কিনি ২০১৬ সালের ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে। কিনে বাসায় রেখে দিই। ছাড়া ছাড়া ভাবে সত্যজিৎ পড়লেও ঠিক করেছিলাম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়া আমার কর্তব্য। সেই উপলক্ষেই শঙ্কু শুরু করা। কিন্তু শঙ্কু এতটাই বিমহিত করে দিয়েছিল আমাকে যে আমি টানা পড়ে শেষ করতে পারিনি। ভয় লাগছিল যে পড়ে ফেললেই তো শেষ হয়ে যাবে। তাই যতটা রয়ে সয়ে পড়া যায় ততটাই ভাল ছিল আমার জন্য। তাই ঢাকা থেকে বাসায় আসলে প্রতিবার একটা করে গল্প পড়তাম। তারপরো শঙ্কু শেষ হয়ে গেল। ইশ শঙ্কুর যদি আরো বই থাকত। :(

  • Nur Mohammad  Sabbir

    প্রোফেসর শঙ্কু সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট একটি কালজয়ী চরিত্র।
    খাটি বঙ্গদেশী শঙ্কু পেশায় এবং নেশায় একজন বৈজ্ঞানিক।তার কর্মক্ষেত্র কোলকাতায় হলেও গবেষণাক্ষেত্র গিরিডিতে।আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিকমহলে তার সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে।নিউটন নামক তার একটি পোষা বেড়াল এবং প্রহ্লাদ নামক একজন চাকর রয়েছে।এছাড়াও রয়েছে তার প্রতিবেশি অবৈজ্ঞানিক মানুষ অবিনাশবাবু যাকে একাধিকবার তার সাথে অভিযানে বেরোতে দেখা যায়।বৈজ্ঞানিকমহলে তার অনেক বন্ধু রয়েছে কিন্তু তার মধ্যে ওল্ড ফ্রেন্ড সামারভিল অন্যতম।ভয়ঙ্কর অভিযানে তিনি অকুতোভয় কিন্তু আত্মভোলা;আবার আশ্চর্য সংযমী।তার আবিষ্কারের পদ্ধতি যেমন বিচিত্র,তেমনই অদ্ভুত তার আবিষ্কারসমূহের নাম।অ্যানাইহিলিন,নার্ভিগার,স্নাফগান,মিরাকিউরল,অমনিস্কোপ,ক্যামেরাপিড,লিঙ্গুয়াগ্রাফ ইত্যাদি ইত্যাদি।
    কেউ কেউ বলেন তিনি নাকি একটি ভীষণ পরীক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারান।আবার এও শোনা যায় যে তিনি কোনো অজ্ঞাত অঞ্চলে গা ঢাকা দিয়ে নিজের কাজ করে যাচ্ছেন;সময় হলে আত্মপ্রকাশ করবেন।
    সত্যজিৎ রায় শঙ্কুর এই গল্পগুলোতে কল্পবিজ্ঞানের সঙ্গে মিশিয়েছেন অ্যাডভেঞ্চারকে এবং তার সাথে জুড়েছেন অফুরন্ত রহস্যরস।
    প্রথম কাহিনি 'ব্যোমযাত্রীর ডায়রি' তে শঙ্কু নিজেই বলেছেন নিজের কাহিনী।তারপর থেকে শঙ্কুর আটত্রিশটি সম্পূর্ণ ও দুইটি অসম্পূর্ণ ডায়রি প্রকাশিত হয়েছে।
    এই বিশ্ববিখ্যাত চরিত্রটিকে নিয়ে সত্যজিৎ রায় যেসব আশ্চর্য কাহিনী রচনা করেছেন তাকে শুধু কল্পবিজ্ঞান কাহিনী বললে সবটুকু বলা হয়না।কল্পবিজ্ঞান তো অবশ্যই,একই সাথে এই কাহিনীগুলোতে মিশে আছে ভ্রমণ,রহস্য,অ্যাডভেঞ্চার ও নিদারুণ অনিশ্চয়তা।আবার দুরন্ত অভিযান,অতীন্দ্রিয় পরিপার্শ্ব,ফ্যান্টাসি ও রোমাঞ্চের মিশ্রণে গল্পগুলো জমজমাট।

  • Sabbir Ahmed

    ফেলুদার পর সত্যজিৎ রায়ের আরেক অসামান্য সৃষ্টি বাংলার বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও আবিষ্কারক প্রফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু।

    শুরুর দিকের গল্পগুলোতে শঙ্কুকে পাগলাটে, ক্ষাপাটে বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত করা হলেও মাঝামাঝি ও শেষের দিকের গল্পগুলোতে তাকে একজন বিচক্ষণ মানুষ হিসেবে দেখানো হয়েছে। গল্পগুলোতে গুটি কয়েক অসঙ্গতিও ধরা পড়েছে এবং সত্যজিৎ রায় শঙ্কু অভিযান শেষ করে যেতে পারেন নি। শেষের দিকের দুটি গল্প অসম্পূর্ণ।

    গল্পগুলোতে অনেক আজগুবি ও অসম্ভব আবিষ্কারের কথা লেখা হয়েছে যা আদৌও সম্ভব নয়। এতে করে কিন্তু অ্যাডভেঞ্চারের মজা বিনষ্ট হয় নি। ফলে কিশোর শ্রেণীর পাঠকদের জন্য বইটি সুপারিশ যোগ্য।

    সর্বোপরি, আমার ধারণা, হয়ত সত্যজিৎ রায় শঙ্কুর মাধ্যমে বাঙ্গালী বিজ্ঞানীদের অভার পূরণের প্রয়াস নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, একজন সত্যিকারের বিজ্ঞানীর মনমানসিকতা কেমন হওয়া উচিত তাও তিনি ব্যক্ত করেছেন শঙ্কুর মাধ্যমে। তাইতো দেখা যায় খ্যাতি অর্জনের মোহ, ধন সম্পদের লালসা তার কাছে হার মেনেছে। ব্যক্তিস্বার্থকে শঙ্কু অনেক জায়গায় জলাঞ্জলী দিয়েছে বৃহত্তর স্বার্থের খাতিরে। বিশ্বের সকল দেশের সকল ক্ষেত্রের বিজ্ঞানীদের প্রতি তার ছিল অগাধ ভালবাসা। সত্যিকারের বিজ্ঞানী হতে হলে শঙ্কুর মতনই হওয়া উচিত।

    কে জানে হয়ত শঙ্কুর গল্প পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে একদিন সত্যি সত্যি এদেশে জন্ম নিবে বিখ্যাত বিজ্ঞানী যার দ্বারা আলোকিত হবে বাঙ্গালী জাতি বিশ্ব দরবারে।

  • Avishek Bhattacharjee

    প্রফেসর শঙ্কু সত্যজিৎ রায়ের একটি অমর সৃষ্টিই বলা চলে। সত্যজিৎ যেমন ফেলুদাতে অনুসরণ করেছেন শার্লক হোমসকে ঠিক তেমনই শঙ্কুতে অনুসরণ করেছেন আর্থার কোনান ডয়েলের প্রফেসর চ্যালেঞ্জারকে।
    শঙ্কু একজন বাঙালী বিজ্ঞানী। থাকেন একটি বিড়াল ও এক ভৃত্য প্রহ্লাদের সাথে বিহারে। মূলত পদার্থবিজ্ঞানী হলেও বিজ্ঞানের সকল ক্ষেত্রেই শঙ্কুর অবাধ বিচরণ।     উনার আশ্চর্য কিছু আবিষ্কার আছে যার মধ্যে প্রায় প্রতিটা গল্পেই পাবেন মিরাকিউরল ওষুধ আর আন্যাইহিলিন গান। মিরাকিউরল হল সর্বনিরাময়কারী ওষুধ আর আন্যাইহিলিন গান হল সর্ববিনাশকারী। শঙ্কু একজন বিজ্ঞানীর সাথে সাথে একজন অভিযানকারী। বিচিত্র সব অভিযানে বিচিত্র সব মানুষের সাথে তার পদযাত্রা।
    শঙ্কুর গল্প এগিয়ে যায় তার ডায়েরী ধরে। সমস্ত অভিযানগুলো ডায়েরীতে টুকে রাখতেন আর এখান থেকেই সব অভিযানের বৃন্তান্ত প্রকাশিত হয় শঙ্কুর নিরুদ্দেশের পরে। বিচিত্র সব অভিযান পড়তে যেকোন বয়সের মানুষেরই ভাল লাগবে। আমি যখন শঙ্কু সমগ্র পড়া শুরু করি শেষ না করা পর্যন্ত খুব কমই থেমেছি। কোন যায়গাই বোরিং লাগেনি। এই অনন্য চরিত্রকে নিয়ে চলচ্চিত্রও হয়েছে। যেকোন পাঠকই আনন্দ লাভের জন্য পড়ে ফেলতে পারেন এই বইটি।

  • Emtiaj

    বড় হয়ে গেছি। আজকাল সায়েন্স ফিকশান পড়লেও পিউর সায়েন্সের চিন্তা মাথায় চলে আসে; খুবই খারাপ ব্যপার।

    শঙ্কু একজন বিজ্ঞানী নন, অতিমানবীয় টাইপের অতিবিজ্ঞানী।

    আমি ডুংলুং-ডোর এ যেতে চাই। সারাক্ষণ মায়ার জগতে থাকতে চাই।

    আরেকটা ব্যপার দেখলাম, হয়তো আমার বইটা পাইরেটেড বলেই কীনা (ভুলই হয়তো)

    "স্বর্ণপর্ণী" তে আছে,
    ১৬ জুন
    আজ আমার জন্মদিন

    আর "ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা" তে আছে
    ১৬ অক্টোবর
    আজ আমার পঁচাত্তর বছর পূর্ণ হল।

    অবশ্য এটাও বলে রাখা ভালো, শেষের গল্পটা উনি শেষ করে যেতে পারেননি।

  • Fahad Ahammed

    বাংলা সাহিত্যের এক অদ্বিতীয় ব্যক্তি সত্যজিৎ রায়। শঙ্কু সমগ্রের প্রতিটি গল্পই অসাধারণ। প্রথম গল্পটা দিয়ে সত্যজিৎ যে ভাবে সম্পূর্ণ একটা সিরিজ শুরু করার ভূমিকা লিপিবদ্ধ করেছেন সত্যি বলতে অতুলনীয়।
    বইটা পড়েছি আর উপভোগ করেছি।

  • Abhishek Saha Joy

    প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু,সত্যজিৎ রায়ের এক অমর সৃষ্টি।উদ্ভট এবং বিচিত্র সব আবিষ্কার আর শ্বাসরুদ্ধকর সব অভিযান যার বৈশিষ্ট্য।বইটির প্লাস পয়েন্ট হলো সত্যজিৎ রায়ের নিজের আঁকা প্রফেসর শঙ্কুর দুর্দান্ত সব স্কেচ!

  • SHOMPA

    Fun read!

  • Sourojit Das

    Brilliant. Thought-provoking. Hair-raising. Professor Shonku, the man with the million miracles, and a heart of gold lives for science and has a healthy appetite for adventure. In the company of his friend Nakur babu(sometimes dismissive of his achievements), and the wily cat Newton(not many felines can boast of taking down shady Egyptian assasins all by themselves); the intrepid professor takes on challenges both on the Earth and beyond. Ray is not only Bengali literature's answer to Conan Doyle, but Jules Verne(in a way..as he doesnt delve into the depth of detail as much as Verne did..maybe Wells is a better example) as well

  • Riju Ganguly

    These are classics that had helped shape my childhood, firing the imagination as well as providing a superb escape from the everyday relaities of grumpy school-teachers, problematic domestic life, neighbourhood bullies etc. The adventures are superb examples of Ray's unique brand of story-telling, combining mystery, science (improbable, but tremendoulsy attractive to young minds), horror, and suspense. But the publishers could have easily annotated this collection to enable us to appreciate the creativity of the last renaissance man of Bengal to a greater extent. Otherwise, highly recommended.

  • Livresque

    This is the book of my life. I read it when I was 14 years old . This is the first science fiction book I read in my life and this book is why I chose science in my life.

    This is a phenomenal book in Bengali Science fiction writing. Every story is invigorating and takes your mind afar. It's scope and ideas are captivating! Every Bengali reader should read this collection at least one in their lifetime. I hope someone would translate it into english for International audiences.

  • Sohan Ridwan

    আমার সবথেকে পছন্দের প্রফেসর শঙ্কু!
    সত্যজিৎ রয় দি বেস্ট

  • Aniruddha Sengupta

    Fit to rival the greatest sci-fi fiction in the English Language, it is a pity that the few translations fail to do justice to the original Bengali prose.

  • Pranta Biswas

    প্রফেসর শংকুর ডায়েরি হচ্ছে রহস্য রোমাঞ্চের মোড়কে এক অতি সরল সায়েন্স ফিকশন। আমার বইয়ের রেটিং দেওয়ার অভ্যাস অনুযায়ী শুধুমাত্র যেসকল বই পুনরাবৃত্তি করার সম্ভাবনা আছে সেগুলোই পাঁচ তারা পেয়ে থাকে। শংকু সমগ্র আবার রিপিট করবো কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে সম্ভবত আমি নিজে ভুল সময়ে বইটি পড়ার ফলে পুরো স্বাদ আস্বাদন করতে পারিনি। আজ থেকে ৬/৭ বছর আগে বইটি পড়া শুরু করলে খুব ভাল হতো। বইটি অনুর্ধ্ব বিশ বছরের পাঠকদের জন্য খুবই উপভোগ্য হবে মনে করেই পাঁচ তারা দেওয়া।

  • Setraj Jahan

    প্রফেসর শঙ্কু পড়া হয়েছে আরো বছর দশেক আগে। এখনো এই সাংঘাতিক আর অদ্ভুত মেধাবী প্রফেসর এর আবিষ্কার গুলো মিস করি। বাস্তব জীবনে তার কিছু আবিস্কার সত্যিই দরকার ছিল।
    An amazing combination of fantasy and fiction.

  • Nusrat Jahan

    Hail Professor Shonku!

  • Shukla Das

    আমার কাছে প্রফেসর শংকু ই সত্যজিৎ রায়ের সেরা ক্রিয়েশন।

  • Ashik Innerpeace

    Satyajit ray, one of the most talented people in the history of bengali literature and movie being a writer, movie director, music producer and artist. He has signature difference from others of his time in his every piece o work. Shanku is one of them.
    Shanku is a collection o science fiction short stories about a professor scientist shanku. Nobody ever tried science fiction before him at this scale before. So, we have to admit it was an audacious job.
    If we compare on the logic of science the stories may be weakened, but if we concentrate on story line its amazing. In portraying shanku's inventions MR. Ray was really creative, for example "botika india". He didnt come up with any scientific complexity rather kept it to the rudimentary level. Yes, some may question his scientific ability regarding this, but it made the story more attractive and acceptable to readers of both scientific and non-scientific base. Another thing amazed me, the fusion of science and ghost and spirits, that tastes different. Also the plot of the stories take us to different countries, from egypt to Germany, South America to south africa. This may attract young adults.
    Some of the stories have same plots and you can guess the end, which may bore some readers. Serious science fiction lovers may also find some stories totally illogical.
    The illustrations on the book is also made by satyajit ray himself. Overall its an another brilliant work of satyajit ray, which will sooth the readers very much.

  • Madhurima Nayek

    এই বইটি বাংলা সাহিত্যের এমন একটি সম্পদ যা ছোটো বড়ো সবার মনোরঞ্জন করতে পারে। পড়তে গিয়ে সবথেকে বেশি অবাক হয়েছি প্রফেসর শঙ্কুর আবিষ্কৃত অসাধারণ সব বড়ির কথা জেনে, যেমন - এয়ার কন্ডিশনিং পিল, খিদে মেটানোর বড়ি - বটিকা ইন্ডিকা, তৃষ্ণা মেটানোর জন্য তৃষ্ণাশক বড়ি, টি পিলস কফি পিল্স, ফিশ পিল আরও কত কি ।
    কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলবো হাতে গোনা কয়েকটা গল্প (যেমন - প্রফেসর শঙ্কু ও বাগদাদের বাক্স, প্রফেসর শঙ্কু ও ঈজিপ্সীয় আতঙ্ক,শঙ্কুর সুবর্ণসুযোগ ) ছাড়া প্রতিটা গল্পই খুবই ভালো লেগেছে।

  • Arafat Hossain

    "সত্যজিৎ রায়ের গল্প"-শুনলেই মনের ভেতর একটা থ্রিল অনুভব হয়।ফেলুদা, তাড়িনীখুড়ো বা শঙ্কু কিনবা ছোট গল্পগুলো সত্যজিৎ রায় এমনভাবে লিখেছেন যা সব বয়সী পাঠক দের মনে রোমাঞ্চ সৃষ্টি করে।ড. ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর ডায়রির মত ক্লাসিক আমার মতে বাংলা সাহি���্যে কমই আছে। চাদেঁর পাহাড়ে"-এর "সংকর" বা "আলভারেজ" এর পর এমন জাঁদরেল অ্যাডভেন্ঞ্চার শুধু শঙ্কুর ডায়রিতেই পেয়েছি।

  • Sukla Pal

    The best bengali science fiction book. I enjoyed it throughout. Character Shanku (the great physicist) is the auspicious creation of Satyajit Ray. The genius thought and discovery of Prof. Shanku is worth readable.

  • Shom Biswas

    There is a kind of humanity in Professor Shonku's stories that one would really wish one's children would somehow imbibe. So I would have to prepare to read them to my boy once he is old enough to absorb them.

  • Tanvir Rivnat

    এই শঙ্কুর কথা আমার আজো মনে পড়ে। স্কুল জীবনে পড়া তিন গোয়েন্দা গল্পের পর, শঙ্কু আর ফেলুদাই ছিলো সঙ্গী সাথী। শঙ্কু পড়তে যেয়ে স্বপ্নদেশে ঘুরে বেড়ানো, অদ্ভুত সব প্রাণী, জায়গা, কেস - শরীরের সেই শিহরণ আজো মনে পড়ে।

  • Ayesha

    সেই বাচ্চাকালে পড়া হয়েছিলো! এখনো favourite! :)

  • Souvik Das

    osadharon.... na porle jibon britha !!