Title | : | গুপ্তবিদ্যা |
Author | : | |
Rating | : | |
ISBN | : | - |
Language | : | Bengali |
Format Type | : | Hardcover |
Number of Pages | : | 143 |
Publication | : | First published February 1, 2022 |
গুপ্তবিদ্যা Reviews
-
আলোচ্য বইটি দু'টি বড়োগল্পের সংকলন। তারা হল~
১) গুপ্তবিদ্যা;
২) জুডাস কয়েন।
'অকাল্ট' শব্দটার সঙ্গে এখন নানা অর্থ ও অনুষঙ্গ জড়িয়ে গেছে। তবে আদতে এই শব্দটির অর্থ হল গোপন জ্ঞান বা গোপন সংগঠন— যারা এমন কিছুর চর্চা করে যা প্রকাশ্যে আসে না বা আসা উচিত নয়। অর্থাৎ গুপ্তবিদ্যা!
ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, অপবিজ্ঞান হিসেবেই কথিত ও নিন্দিত জ্যোতিষ কিন্তু হাজার-হাজার বছর ধরে গুপ্তবিদ্যা হিসেবেই স্বীকৃত। তাহলে দিকে-দিকে এত জ্যোতির্বিদ এলেন কোত্থেকে? তাঁদের এত পসারের উৎসই বা কী? সবচেয়ে বড়ো কথা, মানুষের কল্যাণের বদলে তাদের প্রতারিত করাকেই যারা জীবনের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে, সত্যিকারের গুপ্তবিদ্যার সাধকের চোখে তাদের কী ধরনের শাস্তি প্রাপ্য?
এই প্রশ্নের উত্তর, আর সেই দণ্ডদাতার সন্ধান নিয়েই গড়ে উঠেছে প্রথম বড়োগল্পটি। এক সিরিয়াল কিলারের কাহিনির পাশাপাশি এতে মিশে গেছে জ্যোতিষের কিছু ধারণা ও বিশ্বাস। তারই সঙ্গে মিশে গেছে অন্য এক রহস্য— কিন্তু সেটিকে একেবারেই অসম্পূর্ণ রেখে লেখক হঠাৎই আমাদের ত্যাগ করেছেন। না হলে এই গল্পটি বেশ জমাট হয়ে উঠছিল।
দ্বিতীয় গল্পটি অলৌকিক সাহিত্যের বেতাজ বাদশা মুহম্মদ আলমগীর তৈমূরের 'প্রাচীন মুদ্রা' কাহিনিটির এক অতি ক্ষীণ প্রতিধ্বনি। অকারণ ইনফোডাম্পিং এবং সম্পর্কহীন নানা কথার জটলা এই লেখাটিকে আদৌ জমাট বাঁধতে দেয়নি। সর্বোপরি, এটিও পরিণতিহীন আকারেই শেষ হয়ে গেছে।
সব মিলিয়ে এই ছোট্ট বইটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে তার প্রথম লেখাটিই। আগামী দিনে ওই লেখাটিকে যথাযথভাবে সম্পূর্ণ করে লেখক সেটিকে অভীষ্ট সার্থকতা দেবেন— এই আশায় রইলাম। -
একটি উপন্যাস এবং একটি বড় গল্পের সংকলন এই গুপ্তবিদ্যা বইটি। উপন্যাস গুপ্তবিদ্যার নামেই বইয়ের নামকরণ করা হয়েছে।উপন্যাসটিতে থ্রিলার এবং তারই সাথে কিছু অলৌকিকতার মশলা আছে। সিরিয়াল কিলিং এর মত ব্যাপার আছে এতে। আর বড় গল্পটি অলৌকিক কাহিনী, যদিও হাড় হিম করা কোন অলৌকিকতা নয়। এর আগে মনীশ মুখোপাধ্যায়ের ধূমাবতী ট্রিলজি আর কিছু ছোট গল্প পড়েছিলাম। বরাবরই ওনার লেখা ভালো লাগে।
শহরজুড়ে কিছুদিন পড় পরই ঘটে যাচ্ছে নৃশংস সব হত্যাকাণ্ড। খুনের পর অচেনা হত্যাকারী লাশের পাশে রেখে যাচ্ছে একটা করে অদ্ভুত ধাঁধার কাগজ। এই কেসের দায়িত্ব এসে পড়ে স্পেশাল ব্রাঞ্চের অফিসার নীলাদ্রির উপর,ধাঁধার কাগজগুলো দেখে নীলাদ্রির ধারণা খুনি এইসব ধাঁধার মাধ্যমে তার পরবর্তী খুনের ধরন আর দিন ক্ষণ জানিয়ে দিচ্ছে সবাইকে। কিন্তু তারপরও কিছুতেই আসল মানেটা বুঝতে পারছে না ও। নীলাদ্রি কি পারবে এই কেসের সমাধান করতে? মনোবিদ এবং অপরাধবিজ্ঞানীদের প্রকাশিত অপরাধ সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, সিরিয়াল কিলিং এক বিশেষ ধরনের অপরাধ। অপরাধীর মনস্তত্ত্ব এই ধরণের অপরাধে বিশেষ অনুঘটক রূপে কাজ করে বলে মনে করা হয়। তবে এক্ষেত্রে বিষয়টা একটু ভিন্ন, এই উপন্যাসে এমন একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে গল্প এগিয়েছে, যে বিষয়ের অপপ্রয়োগ করে একদল ঘৃণ্য শ্রেণীর ব্যবসায়ী নেমেছে মানুষের জীবনের কারবার করতে। অপপ্রয়োগের ফলে ক্ষুণ্ন হয়েছে গুপ্তবিদ্যার সম্মান। কি সেই গুপ্তবিদ্যা? জানতে হলে অবশ্যই এই বইটি পড়তে হবে। এই গল্পের শেষে লেখক আরো একটা রহস্যের ইঙ্গিত দিয়েই গল্প শেষ করে ফেলে, সেটি জানার জন্য এখন থেকেই মন উশখুশ করছে।
দ্বিতীয় গল্পটির নাম জুডাস কয়েন। খ্রিষ্টীয় ধর্মমতে এই সেই কয়েন যার জন্য যিশুর শিষ্য জুডাস যিশুকে ধরিয়ে দিয়েছিলো শত্রুদের হাতে, ফলাফলস্বরূপ যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু লাভ করতে হয়। এই কয়েনের জন্যই শিষ্য করেছিলো তার গুরুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, এই কয়েনের জন্যই যিশুর জীবনে নেমে আসে দুর্ভোগ। এই কয়েন অভিশপ্ত, যার কাছে থাকে তার জীবনকে নরক করে তুলে। জীবনে নেমে আসে অভিশাপ। গল্পে দেখতে পাই ঘটনাচক্রে জুডাস কয়েনের একটি কয়েন চলে আসে কলকাতা। এই কয়েনের অভিশাপ আজও সমান ভাবে বিদ্যমান নাকি তা সযত্নে লালন করা আছে কারোর চোরকুঠুরিতে? ক্যানসার হাসপাতালের সামনের অঞ্চলের আনাচে কানাচে রাত বিরেতে ঘুরে বেড়ায় ওরা কারা? কীসের স্পর্শে হঠাৎ থমকে যায় সময়, অন্ধ ফিরে পায় দৃষ্টি আর বিকল অঙ্গে ফেরে সার? প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে এই গল্পটি। যদিও গল্পের শেষটা খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়েছে, গল্প শেষে মনে হলো এর একটা জমজমাট সেকেন্ড পার্ট হতে পারে,তা অবশ্য লেখকের ইচ্ছা হলেই সম্ভব। -
পড়ে শেষ করলাম বিখ্যাত লেখক মনীশ মুখোপাধ্যায়ের লেখা গুপ্তবিদ্যা বইটি। এর আগে লেখকের 'ভৈরবী ও অন্যান্য' বইটি পড়ে মুগ্ধ হওয়ায় এই বইটা পড়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। বইটি মূলত একটি উপন্যাস ও একটি বড় গল্পের সংকলন।
🔴 গুপ্তবিদ্যা- শহরজুড়ে ঘটে চলেছে একের পর এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড। খুনের পর হত্যাকারী লাশের পাশে ফেলে যাচ্ছে একটা করে অদ্ভুত ধাঁধার কাগজ। স্পেশাল ব্রাঞ্চ অফিসার নীলাদ্রি এই খুনের তদন্ত করতে গিয়ে সম্মুখীন হয় একাধিক প্রশ্নের। গুপ্তবিদ্যা কি এমন জিনিস যার নিয়ম ভঙ্গ করায় শাস্তি নেমে আসছে ভয়ংকর মৃত্যুর বেশে? তদন্তের পথে তার দেখা হয় এক অদ্ভুত ক্ষমতাসম্পন্ন যুবকের সাথে। কে, কী উদ্দেশ্যে হত্যালীলা চালাচ্ছে এবং এই গুপ্তবিদ্যাই বা কি তার উত্তরের খোঁজ রয়েছে এই থ্রিলার উপন্যাসে।
🟡 জুডাস কয়েন- দুই বন্ধু গল্পের লোভে পৌঁছে যায় তাদের শিক্ষকের বাড়ি। সেখানে গিয়ে গল্পচ্ছলে সেই শিক্ষকের কাছে শুনে ফেলে অদ্ভুত এক মুদ্রার কাহিনী যার অভিশাপ বারে বারে ফিরে এসেছে পৃথিবীর বুকে। সেই মুদ্রার প্রভাবে কখনো কোনো অলৌকিক মিরাকল ঘটেছে তেমনি কখনো তা ডেকে এনেছে সাক্ষাৎ অভিশাপ। ভিখারি হোক ধনী ব্যবসায়ী কেউ কখনো এড়াতে পারেনি এর অভিশাপ।
যেহেতু এর আগে মনীশ মুখোপাধ্যায়ের লেখা ভৌতিক এবং অলৌকিক গল্পগুলোর সাথে পরিচয় ঘটেছিল তাই এই বইটা থেকে প্রচুর আশা ছিল। এবং লেখক সেই আশা সর্বোতভাবে পূরণ করেছেন। থ্রিলার লেখাতেও যে তিনি বাজিমাত করতে পারেন তা দেখালেন লেখক। একবার শুরু করার পর শেষ না করে আমি থামতে পারিনি। গুপ্তবিদ্যা উপন্যাসটি লিখতে যে ওনাকে ভালো পরিমাণ পরিশ্রম এবং পড়াশোনা করতে হয়েছে তার প্রমাণ মেলে গল্পে উল্লিখিত তথ্যগুলো থেকে। আর সত্যি বলতে উপন্যাসটি পড়তে পড়তে রীতিমত জ্যোতিষশাস্ত্র সম্পর্কে আগ্রহ জন্মাচ্ছিল মনের ভেতরে, সেটাও লেখকের অন্যতম কৃতিত্ব। কেবল জুডাস কয়েন গল্পটি আরো একটু বেটার (বিশেষত শেষটুকু আরো রোমাঞ্চকর হলে) হলে আরো ভালো হত। আর গুপ্তবিদ্যা উপন্যাসের শেষে লেখক যে ঘোষণাটি দিয়েছেন তার প্রতীক্ষা শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।
বইটির বাঁধাই খুব ভালো, বানান ভুল খুব সামান্য এবং প্রচ্ছদটি অসাধারন।
ওভারঅল রেটিং- ৪/৫
যারা থ্রিলার পড়তে ভালোবাসেন অবশ্যই পড়ে ফেলুন এই বইটি এবং প্রবেশ করুন গুপ্তবিদ্যার মায়াজালে।
সকলের পাঠ শু�� হোক।