ওডিনের শেষ দিন by Nazrul Islam


ওডিনের শেষ দিন
Title : ওডিনের শেষ দিন
Author :
Rating :
ISBN : -
Language : Bengali
Format Type : Hardcover
Number of Pages : 143
Publication : First published March 10, 2022

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে দেশের নামকরা বিজনেসম্যান তরফদার গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক জাভেদ তরফদার মারা গেলো। মৃত্যুর পরে কে বা কারা রটিয়ে দিলো স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি জাভেদ তরফদারর। খুন করা হয়েছে তাকে। কান টানলে মাথা আসে। আর রটনায় আসে পুলিশ। পিবিআইয়ের হাই প্রোফাইল কেস স্পেশালিষ্ট আবুল হাসনাতের ডাক পড়ল ঘটনা আর রটনার সত্যতা খুঁজতে। ছুটি থেকে আবুল হাসনাত ফিরে এসে কি ফায়দা হবে কিছু?

জাভেদ তরফদারের মৃত্যুতে লাভবান হচ্ছে কে? তার ছেলেমেয়েরা? নাকি এর পিছনে আছে অন্য কেউ? সত্যিই কি খুন হয়েছে জাভেদ তরফদার? নাকি কেউ এর ফায়দা লুটছে? জাভেদ তরফদার খুন হোক কিংবা তার স্বাভাবিক মৃত্যু হোক ঘটনার মূল প্রথিত আছে সুদূর অতীতে।

চলুক পাঠক বিজনেস টাইকুন জাভেদ তরফদারের ফেলা আসা জীবনে টুকি দিয়ে দেখে আসা যাক।


ওডিনের শেষ দিন Reviews


  • সালমান হক

    ৩.৫/৫
    ওডিনের শেষ দিন বাতিঘর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ছিমছাম একটা রহস্যোপন্যাস। মার্ডার মিস্ট্রি। ট্রোপটা বহুল ব্যবহৃত। বয়স্ক ধনকুবেরের অন্তর্ধান। পরিবারের সবার উপরে গিয়ে পড়া সন্দেহের তীর। ঝানু ডিটেকটিভ। শেষের দিকে ক্লাইম্যাক্স এবং মূল টুইস্ট।

    এত সব ট্রোপ ব্যবহারের পরেও ওডিনের শেষ দিন বিশেষভাবে মনে থাকবে এর আটপৌরে বর্ণনার কারণে। বর্ণনার দিক থেকে আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখতে পেয়েছি লেখকের লেখায়। যদিও কিছুটা রিপিটেশন চোখে পড়েছে, সেটা সামান্য। ১৪৪ পাতার উপন্যাস। এক বসায় শেষ করে ফেলা যাবে লেখনীর কল্যাণে। তবে পাঠককে কিছুটা শ্বাস ফেলার সুযোগ দিলে ভালো হতো বোধহয়। চাইলে আরেকটু সময় নয় বর্ণনা করা যেত সবকিছু।

    মূল রহস্যটা আগ্রোহদ্দীপক। ক্ল্যাইম্যাক্সে রহস্যোন্মচনের ধরণটা ব্যক্তিগতভাবে মনে দাগ কাটতে পারেনি। টুইস্টগুলো বেশি পরপর হয়ে গেছে। তবে এগুলো বিবেচনায় নিয়েও উপভোগ্য একটা উপন্যাস ওডিনের শেষ দিন।

  • Wasee

    ক্ষমতাশীল, অভিজাত পরিবারের লুকায়িত অন্ধকার অধ্যায় আর প্রতিহিংসার গল্প 'ওডিনের শেষ দিন।' নামকরণ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, প্লট এক্সিকিউশন মার্ডার মিস্ট্রি হিসেবে চলনসই। আক্ষেপের ব্যাপার হচ্ছে চমৎকার একটা 'Howdunit' হতে হতে গল্পটা 'Whodunit' এ মোড় ���েয়।

    ক্রাইম থ্রিলারে লেখকের বিশেষ পারদর্শিতা আছে, সেটার প্রমাণ মেলে তার আগের সবকটি বইয়ে। 'ওডিনের শেষ দিন' পরিসরে ছোট হলেও কাহিনি বেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যায়। সাসপেক্ট হিসেবে আবির্ভূত হয় অনেকেই, জটিলতাও বাড়তে থাকে। কিন্তু শেষপর্যন্ত প্লট টুইস্ট খুব বেশি মন ভরাতে পারেনি।

    প্রটাগনিস্ট আবুল হাসনাত-সিদ্দিক জুটির কাছ থেকে ভবিষ্যতে আরও অনেক বেশি প্রত্যাশা রইল।

  • Ishraque Aornob

    গোল্ডেন এইজ স্টাইলে দারুণ একটা মার্ডার মিস্ট্রি লিখেছেন নজরুল ইসলাম। প্লটটা সাদাসিদে, কিন্তু প্রয়োগটা জটিলভাবে করেছেন ফলে ভালোই ঘনীভূত হয়েছে রহস্য। বলা চলে পারিবারিক মার্ডার মিস্ট্রি। এক ধনী ব্যক্তি শেষ বয়সে এসে রহস্যজনকভাবে খুন হয়, এদিকে তার ছেলে মেয়েদের মধ্যে চলছিল সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে লড়াই। খুনটা করল কে? তদন্তে নামে পিবিআই ইনভেস্টিগেটর আবুল হাসনাত। এরপর পেঁয়াজের খোসার মত বেরিয়ে আসতে থাকে একের পর এক সত্য। তদন্তের প্রসিডিওর নিখুঁতভাবে দেখিয়েছেন লেখক, ফরেনসিক, ইন্টারোগেশন সব স্টেপই ফলো করেছেন। মার্ডার মিস্ট্রি তো লেখাই যায়, তবে লেখার সফলতা তদন্তের সূক্ষ্মতা। এটা এই উপন্যাসে ছিল। কাহিনীতে গতি ছিল, একটানা পড়েছি ব্যস্ততার মধ্যেও। তবে আরও বেশকিছুর ব্যাপারের প্রয়োগ ও ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট ভালোভাবে করে আরেকটু ধীরেসুস্থে লেখা যেত উপন্যাসটা। শেষের টুইস্টটা মোটামোটি ছিল। তবে খুনির খুনের পদ্ধতি বেশ বিচক্ষণ, আনপ্রেডিক্টেবল।
    যারা মার্ডার মিস্ট্রি/পুলিশ প্রসিডিওরাল পছন্দ করেন তাদের জন্য রিকমেন্ডেড।

  • Ananna Anjum

    দারুণ একটি মার্ডার মিস্ট্রি পড়ে শেষ করলাম। গল্পটি বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে। গতকালকে রাতে পড়া শুরু করেছিলাম এবং আজকে দুপুরে বাকিটুকু শেষ করেছি। বইটিতে ভালোই সাসপেন্স ছিল বিশেষ করে শেষের দিকের টুইস্ট অনেক ভালো লেগেছে। কোথাও মনে হয়নি কাহিনী টেনে বড় করা হচ্ছে, এক কথায় বলতে পয়েন্ট টু পয়েন্ট লিখেছেন লেখক নজরুল ইসলাম ভাইয়া।
    যাঁরা থ্রিলার এবং একই সাথে মার্ডার মিস্ট্রি পড়তে চান তাঁরা অবশ্যই বইটি পড়ে ফেলবেন।

  • তানজীম আহমেদ

    'ওডিনের শেষ দিন'; বিষণ্ণ কাব্যিক একটা নাম। অন্তত আমার কাছে তো তাই মনে হয়েছে। বিষণ্ণ কাব্যিক নাম হলেও নজরুল ইসলামের লেখা এই উপন্যাসিকাটা কিন্তু মোটেও লিটার‍্যারি ফিকশন টাইপ কিছু না৷ বরং একটা মার্ডার মিস্ট্রির সাথে পুলিশ প্রসিডিউরাল এর জম্পেশ কম্বিনেশন।

    উপন্যাসিকা শুরু হয় বিশিষ্ট ধনকুবের তরফদার গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রির ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাভেদ তরফদারের মৃত্যু দিয়ে। পাঠকরা অজ্ঞাত খুনীর দ্বারা খুনের সিন আবছা ভাবে প্রথমে দেখতে পেলেও সেটা স্রেফ পাঠকরাই জানেন, উপন্যাসের চরিত্ররা জানেন ৮০+ বয়সের জাভেদ সাহেব মারা গেছেন হৃদরোগে। ভদ্রলোকের শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিলো যে হৃদরোগে মারা না গিয়ে তিনি খুন হলেও হতে পারেন, এটা কারো মাথায়ই আসেনি। কিন্তু জাভেদ তরফদার মারা যাবার ৩ সপ্তাহ পর তার স্ত্রী সন্দেহ প্রকাশ করেন খুনের বিষয়ে৷ আর তখনই মাঠে নামে পিবিএই এর গোয়েন্দা আবুল হাসনাত আর সিদ্দিক জুটি। মিসেস জাভেদ সন্দেহ প্রকাশ করলেও কে খুন করতে পারেন সে সম্পর্কে কোন সন্দেহ প্রকাশ করেননি। ওদিকে অনেক ধনী পরিবারেই সন্তানদের মাঝে যে অসুস্থ প্রতিযোগীতা দেখা দেয়, এখানেও তার ব্যতিক্রম নয়৷ জাভেদ তরফদারের দুই ছেলের যত না আগ্রহ বাবা খুনি চিহ্নিত করায় তারচেয়ে বেশি আগ্রহ একজন আরেকজন খুনী সাব্যস্ত করায়। উদ্দেশ্য, অপরজনকে ফাঁসিয়ে নিজে সিংহাসনে বসা। ওদিকে তাদের মা মিসেস জাভেদ, দুই ছেলের কাউকেই সমর্থন দিচ্ছেন না। দুই ছেলের কারো সাথেই না থেকে থাকছেন তাদের গাজীপুরের বাংলো বাড়িতে। এমনকি দেখাও করছেন না পরিবারের কারো সাথে। হাসনাত সাহেবের দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে সময় লাগেনা। বুঝতে পারেন, মা কোন ছেলেকেই সমর্থন দিচ্ছেন না কারণ তিনি সন্দেহ করেছেন, দুই ছেলের মাঝেই আছে তার স্বামীর খুনি। পুলিশের শরনাপন্ন হয়েছেন যাতে পুলিশ আসল খুনিকে খুঁজে বের করতে পারে এবং অপর ছেলেকে তিনি সমর্থন দিতে পারেন। কিন্তু আসলেই কি ঘটনা এত সহজ? আকিব তরফদার আর জাহিদ তরফদারের, এদের কেউই কি খুনটা করেছেন নাকি এর সাথে জড়িত আছে অন্য কেউ? যদি থেকেই থাকে তাহলে সে এই পরিবারের সাথে কিভাবে জড়িত? তবে কি ফিরে যেতে হবে খুন হওয়া ধনকুবেরের অতীতের দিনগুলোতে?

    দারুণ কিছু সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে গিয়েছে বাতিঘর থেকে অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত নজরুল ইসলামের উপন্যাসিকা 'ওডিনের শেষ দিন'। সাসপেন্স আর খুবই সুন্দর লিখনশৈলীতে ১৪৪ পেজের এই বইটি চাইলে এক বসায়ই শেষ করা ফেলা সম্ভব। বইয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে লেখকের লিখনশৈলী। লেখক Don't tell, show এর নিয়ম মেনে ন্যারেটিভ স্টাইলে পাঠককে বলার যাইতে ঘটনাপ্রবাহ দিয়ে পাঠককে দেখাতে চেয়েছেন। যে কারণে, আকিব তরফদারের বদমেজাজী স্বভাবের বর্ণনা আমরা শুরুর দিকেই জানতে পারি। একই ঘটনা ঘটে দীপা চক্রবর্তী প্রসঙ্গে জাহিদ তরফদারের ক্ষেত্রেও। আমার মনে হয় লেখকের স্পেশালিটি এখানেই। আকিব তরফদার বদমেজাজী, জাহিদ তরফদারের নারী আসক্তি রয়েছে - এই লাইনগুলোর লিনিয়ার বর্ণনার চাইতে ঘটনাপ্রবাহ পাঠকের মনে বেশি ছাপ ফেলে। ঘটনা প্রবাহ পড়ার মধ্য দিয়ে পাঠক মনে মনে চরিত্রগুলোর একটা ছবি মনে অজান্তেই দাঁড় করিয়ে ফেলে যেগুলো গল্পের বাঁকে বাঁকে তাকে আরো গভীর��াবে রিলেট করতে সাহায্য করে। এছাড়া লেখক পুলিশ প্রসিডিউরিং এ শুধু কেস অফিসারের কাজের বর্ণনাতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। বইতে যথাস��য়ে এসেছে ফরেনসিক ও আইটি। এবং এদের সাথে হাসনাত সাহেবের কথোপকথনে শুধু উপন্যাসের কেস নিয়েই কথা হয়েছে এমনটা নয়। কেসের বাইরেও অন্য কেস নিয়ে কলিগদের মধ্যে যে সাধারণ গসিপ হয় সেটাও উঠে এসেছে এ বইতে, যা বইকে করেছে আরো বাস্তব সম্বলিত। এই ছোট ছোট রাইটিং টুলগুলোর ব্যবহারের কারণে নজরুল ইসলামের লেখা আমাকে মুগ্ধ করেছে। ১৪৪ পৃষ্ঠায় খুব বেশি চরিত্রায়নের সুযোগ না পেলেও আবুল হাসনাত চরিত্রটি আমার বেশ লেগেছে। তবে সিদ্দিক চরিত্রটি আরেকটু ডিটেইলিং পেলে আরো জমতো। তবে আরো জমিয়ে হাসনাত-সিদ্দিক জুটির লেখা আরো আসবে, লেখক যদি এমনটা ভরসা দেন তাহলে আর এ অভিযোগও থাকবে না। ও হ্যাঁ, যারা বইতে টুইস্ট ভালোবাসেন, 'ওডিনের শেষ দিন' তাদেরকে নিরাশ করবেনা। শেষের দিকে বেশ কিছু টুইস্ট আছে যা পাঠককে নিঃসন্দেহে বিস্মিত করবে।

    দুয়েকটা ভুল যে চোখে পড়েনি, তা নয়। যেমন : জাভেদ সাহেবের ছেলেরা বলছিলো, ইপিজেড ওমুকের নামে লিখে দিয়েছে। এখানে বলতে চাই, আমি যদ্দুর জানি ইপিজেড সরকারী জায়গা। ওখানে ফ্যাক্টরী বানাতে চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে, লিজ নিয়ে ফ্যাক্টরী বানাতে হয়৷ এটা কারো ব্যাক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তি না যে চাইলেই ইপিজেড কাউকে লিখে দেয়া যাবে। আরেক জায়গায় দেখলাম, কোন একজনকে ধরতে সিদ্দিক আর হাসনাতকে সাহায্য করে ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশ কেন সাহায্য করেছে সে প্রশ্ন করলে ট্রাফিক পুলিশ বলে, সে সিদ্দিক সাহেবকে দেখেছে একটা লোককে ধাওয়া করতে। তো পুলিশ যখন কাউকে ধাওয়া করে সে তো লোক ভালো নয়। তাই সে পুলিশকে সাহায্য করেছে৷ এখানে কথা হচ্ছে, সিদ্দিক যে পুলিশ তা ঐ ট্রাফিক পুলিশ বুঝলো কিভাবে? সিদ্দিককে আমরা পুরো বইতেই দেখেছি সাদা পোশাকে (জায়গায় জায়গায় সে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছে)। ওখানে কি সিদ্দিক পুলিশের পোশাকে ছিলো?

    ২০০ টাকা মুদ্রিত মূল্যের ১৪৪ পেজের বইয়ের প্রোডাকশন নিয়ে বলার কিছু নেই৷ বাতিঘরের রেগুলার প্রোডাকশন যেটা কিনা আমার কাছে ভালোই মনে হয়। তবে প্রচ্ছদটা আমি একদমই বুঝতে পারিনি। একে তো একেবারেই দায়সারা গোছের প্রচ্ছদ, যেখানে প্রচ্ছদ শিল্পীর হাতে একদমই সময় ছিলোনা বলে মনে হচ্ছে। আর তাছাড়া প্রচ্ছদে যে এলিমেন্ট ব্যবহার হয়েছে তাতে হুইলচেয়ার বাদে বাকি সবকিছুই আমার কাছে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও ক্ষেত্র বিশেষে মিসলিডিং মনে হয়েছে। এ বই কেউ পড়ে থাকলে এবং বইয়ের গল্পের সাথে প্রচ্ছদকে মেলাতে পারলে আমাকে ইনবক্সে বোঝানোর অনুরোধ রইলো।

    তো এই ছিলো 'ওডিনের শেষ দিন' নিয়ে আমার পাঠ-প্রতিক্রিয়া। আমার ক্ষেত্রে বই পড়ে সময় এবং টাকা দুটোই উসুল হয়েছে। যারা মার্ডার মিস্ট্রি, পুলিশ প্রসিডিউরাল পছন্দ করেন তারা নিঃসন্দেহে বইটা পড়তে পারেন। আশা করি হতাশ হবেন না।

  • শুভাগত দীপ

    || রিভিউ ||

    বইঃ ওডিনের শেষ দিন
    লেখকঃ নজরুল ইসলাম
    প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী
    প্রকাশকালঃ মার্চ, ২০২২
    ঘরানাঃ মার্ডার মিস্ট্রি
    প্রচ্ছদঃ কৌশিক জামান
    পৃষ্ঠাঃ ১৪৩
    মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০ টাকা
    ফরম্যাটঃ হার্ডকভার

    কাহিনি সংক্ষেপঃ দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন দেশের নামকরা বিজনেস ম্যাগনেট জাভেদ তরফদার। তিনি তরফদার গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক। একদিন নিজ অফিসে হুইলচেয়ারে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেলো তাঁকে। সবাই ধরেই নিলো, বৃদ্ধ এই বিজনেস টাইকুন মারা গেছেন হার্ট অ্যাটাকে। কিন্তু তাঁর স্ত্রী সেটা ভাবলেন না। নিজের প্রভাব খাটিয়ে স্বামীর মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানার চেষ্টা করলেন তিনি। আর এখানেই প্রবেশ ঘটলো পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অভ ইনভেস্টিগেশন)-এর হাই প্রোফাইল কেস এক্সপার্ট আবুল হাসনাতের। আবুল হাসনাত ও তার সহকারী সিদ্দিক জাভেদ তরফদারের মৃত্যুর পেছনের কারণ অনুসন্ধান করতে লাগলো।

    মৃত জাভেদ তরফদারের দুই ছেলে আকিব তরফদার ও জাহিদ তরফদার, দুই মেয়ে শাহিদা তরফদার ও সুহানা তরফদার, তাদের স্বামীরা - কেউই পূর্ণ সত্য বলছে না। আর অপূর্ণ সত্য, মিথ্যার চেয়ে খারাপ, এটা পুলিশে চাকরি করার সুবাদে আবুল হাসনাত বেশ ভালোভাবেই বোঝে। জাভেদ তরফদারের রেখে যাওয়া অগাধ সম্পত্তির প্রতি লোভে অন্ধ হয়ে আছে তাঁর সন্তানরা। বাবা'র মৃত্যুরহস্য নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথাও নেই। তাই আবুল হাসনাত ও সিদ্দিক সম্পূর্ণ ব্যাপারটা একটু পেছন থেকে তলিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিলো।

    জাভেদ তরফদারের অতীত জীবন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়েই ওদের সামনে এসে হানা দিলো এমন কিছু সত্য, যা লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো সবার অগোচরে। তদন্তের মোড়ই যেন ঘুরে গেলো রাতারাতি। শেষমেষ যখন সবগুলো প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেলো, খোদ পিবিআই অফিসারদেরই বিশ্বাস হতে চাইলো না।

    পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ 'অস্পৃশ্যতা', 'একটি খুনের নেপথ্যে' ও 'শেষ পান্ডুলিপি' খ্যাত তরুণ লেখক নজরুল ইসলামের তৃতীয় মৌলিক কাজ 'ওডিনের শেষ দি���'। মার্ডার মিস্ট্রি ঘরানার এই বইটা মূলত একটা নভেলা। খুব সাদাসিধা একটা মার্ডার মিস্ট্রি বলা যায় এটাকে। একদম আটপৌরে; আলাদা কোনরকম কিছু আমি এই বইয়ের কাহিনিতে লক্ষ্য করিনি। এটার তুলনায় নজরুল ইসলামের পূর্ববর্তী কাজগুলোতে অনেক বেশি ভেরিয়েশন লক্ষ্য করেছি, যখন ওগুলো আমার পড়ার সুযোগ হয়েছে।

    প্রবল বিত্তবান এক বৃদ্ধ খুন হন, যার খুনের মোটিভ তাঁর প্রায় সব সন্তানেরই আছে। আর সেই মোটিভটা মূলত বৃদ্ধের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের শূন্য চেয়ারে বসার লোভ। ওদিকে তাঁর একটা চাপাপড়া বা চাপা দেয়া অতীতও আছে। সংক্ষেপে এই আসলে নভেলা'র পুরো থিম। লেখক পিবিআই হাই প্রোফাইল কেস এক্সপার্ট হিসেবে আবুল হাসনাতকে পরিচয় করিয়ে দিলেন ইনভেস্টিগেটর হিসেবে তাকে কিছুটা অ্যামেচার বলে মনে হয়েছে আমার কাছে, এক্সপার্ট না। সেই তুলনায় তার সহকারী সিদ্দিক সাহেবকে অনেক বেশি ডায়নামিক আর যোগ্য হিসেবে দেখতে পেয়েছি আমি 'ওডিনের শেষ দিন'-এ। বইয়ের বেশ কিছু জায়গাতে সামান্য রিপিটেশন খেয়াল করেছি। এ বাদে নজরুল ইসলামের গল্প বলার ধরণ বেশ ভালো। এতোটুকু একটা নভেলার শেষ দিকে এসে লেখক একাধিক টুইস্ট ব্যাক টু ব্যাক দেয়ার কারণে কাহিনিটা খুব সামান্য হলেও খাপছাড়া মনে হচ্ছিলো। আর ক্লাইম্যাক্সের কথা যদি বলি, আমার পছন্দ হয়নি।

    বেশ কিছু টাইপিং মিস্টেক ও কিছু ভুল বানানের সম্মুখীন হয়েছি 'ওডিনের শেষ দিন' পড়তে গিয়ে। কিছু জায়গায় লেখক সামান্য তাড়াহুড়াও হয়তো করেছেন। বইটার প্রচ্ছদ আমার কাছে অতোটা ভালো লাগেনি। কাগজের মানটা ভালো হলেও বাঁধাই নিয়ে সন্তুষ্ট না। শেষ দিকের ফর্মাগুলো অনেকটা বেরিয়ে আসতে যাচ্ছিলো পড়ার সময়। এখন এই সমস্যাটা শুধু আমার কপিতে না, অন্যান্য কপিতেও আছে বলতে পারছি না।

    ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৩/৫
    গুডরিডস রেটিংঃ ৩.৭১/৫

    #Review_of_2022_14

    ~ শুভাগত দীপ ~

    (১৩ অক্টোবর, ২০২২, সকাল ৮ টা ১ মিনিট; নিজ রুম, নাটোর)

  • Mir Sharifuzzaman

    #বইমেলা_2022_বাতিঘর_মৌলিক_পাঠ_প্রতিক্রিয়া

    #বুকরিভিউ

    নামঃ ওডিনের শেষ দিন
    লেখকঃ Nazrul Islam
    জনরাঃ থ্রিলার
    পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৪৩
    প্রকাশনীঃ বাতিঘর
    প্রকাশকঃ Mohammad Nazim Uddin
    রেটিংঃ ৪/৫
    প্রকাশকালঃ বইমেলা ২০২২
    মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০

    কাহিনী সংক্ষেপঃ -
    ----------------

    দেশের সনামধন্য শিল্পপতি জাভেদ তরফদার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার দুই ���প্তাহ পর উনার স্ত্রীকে একজন ইন্টার্ন ডাক্তার জানালো এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। মহিলা পিবিয়াইয়ের দ্বারস্থ হলেন। পিবিআইয়ের চৌকশ গোয়েন্দা আবুল হাসনাতের উপর নেস্ত হল গপনে তদন্ত করার এটা স্বাভাবিক মৃত্যু না হত্যা তা বের করার। কি আছে এর পিছনে? গদিতে আসীন হওয়ার জন্য ক্ষমতালিপ্সু তার দুই ছেলে নাকি এর গভিরে লুকিয়ে আছে সুদূর অতিতের কোন ঘটনা?

    পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ -
    ---------------

    দারুন একটা বই! ১৪৩ পেজের ঝরঝরে মেদহীন দ্রুত গতির থ্রিলার। বইটির সবচেয়ে অনন্য দিক হল মার্ডার মিষ্টরির সাথে সাথে পারিবারিক কোন্দল, হিংসা, স্বার্থপরতা এই দিক গুল লেখক সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন। আমাদের সমাজে এরকম অনেকেই আছেন যারা জীবনে সাফল্য পেয়ছেন, ক্ষমতার শীর্ষে চড়েছেন কিন্তু অন্যদিকে আদর্শ বাবা মা হতে বেরথ হয়েছেন। অথচ তাদের সন্তানের কন ধারনা নেই কত কষ্ট করে তারা এই সাম্রাজ্য গড়েছেন।

    প্রডাকশন, প্রচ্ছদ , অলংকরন, বাইন্ডিংঃ-
    -----------------------------------
    প্রচ্ছদ অনেক সুন্দর। Kousik Zaman ভাই মনকাড়া প্রচ্ছদ করেছেন। বাইন্ডিং আর প্রডাকশন ভাল ছিল।
    কিন্তু বানা�� ভুল অনেক ছিল।

    চরিত্রায়নঃ -
    -----------
    প্রতিটি চরিত্র যথার্থভাবে পরট্রে হয়েছে। বিশেষ করে জাভেদ সাহেবের ছেলে মেয়ে দের চরিত্রায়ন এত নিখুঁত হয়েহে যে মনে হচ্ছিলো সামনে দেখছি তাদের।

    Lastly, I’ll definitely suggest this book 📖
    Recommended!

    Happy reading 📖😊

  • Tarik Mahtab

    মার্ডার মিস্ট্রি হিসেবে ভালো একটা বই ‘ওডিনের শেষ দিন’। বিস্তৃতি বেশি নয়। ১৪৩ পৃষ্ঠা মাত্র। বইয়ের প্রেক্ষাপটও ছোটই। বিজনেস টাইকুন জাভেদ তরফদারের মৃত্যু দিয়ে কাহিনী শুরু হলেও তার কাহিনী তার জীবন আর পরিবার ঘিরেই। প্রথম থেকেই কাহিনী চমৎকার গতিতে এগিয়েছে। আনপুটডাউনেবল ছিল। শেষদিকে কিছুটা ধীর গতির মনে হলেও কাহিনী একের পর এক বাঁক নেওয়ায় পড়ায় বিরক্তি আসেনি। মৌলিক পড়ে শেষ কবে এতো উচ্ছ্বসিত হয়েছিলাম তা মনে নেই।

    রহস্যের জালটা বেশ ভালো করেই বুনেছেন লেখক। পড়ার সময় প্রচুর সাসপেক্ট চোখে পড়বে। তাছাড়া বইটাকে চমৎকার একটা ‘হাউডানইট’ বইয়ের কাতারেও ফেলা যায়। তদন্ত প্রক্রিয়া খুব ভালো লেগেছে। আবুল হাসনাত-সিদ্দিক জুটিকে আবার দেখতে চাইবো।

    এই বই নিয়ে আলাদা এক্সপেকটেশন না থাকলেও পড়ার সময় নিজেই নিজের এক্সপেক্টেশন কুড়িয়ে নিয়েছে। তা পুরোপুরি পূরণ না হলেও বইটা পার্ফেক্ট এন্ডিংয়ে শেষ হয়েছে। সবকিছু খাপে খাপ। টুইস্ট আছে বেশ কয়েকটা। তবে অত জোরালো কিছু না। মার্ডার মিস্ট্রি হিসেবে পুরো সময় ফোকাস ছিল রহস্যের জট খোলার দিকে। তার সাথে চরিত্রগুলো ভালো লেগে যাওয়ায় পড়া পুরো মাখনের মতো এগোচ্ছিল।

    চরিত্রায়ন খুবই ভালো হয়েছে। এইটুকু বইয়েও সবগুলো চরিত্রকে মোটামুটি নিঁখুতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। আবুল হাসনাত আর সিদ্দিকের যুগলবন্দি বেশ ভালোই লাগলো। আর তাছাড়া প্রথমবারের মতো নিজের নামের কোনো চরিত্রের দেখা পেয়ে যারপরনাই খুশি আমি।

    লেখনশৈলী বেশ পছন্দ হয়েছে। বাক্যগঠন আর উপমার ব্যবহারে লেখকের দক্ষতা বেশ ভালোরকম ফুটে উঠেছে। তাছাড়া কখনো উপমা কিংবা কখনো লেখার মাধ্যমে দেশের বর্তমান অবস্থার যে সূক্ষ্ম সমালোচনা লেখক করেছেন, তা খুবই ভালো লেগেছে। ক্রাইম থ্রিলার বা মার্ডার মিস্ট্রি যা ই হোক দেশের সমসাময়িক অপরাধ জগতের বর্ণনা কাহিনীকে যেমন রিয়েলিস্টিক করে, তেমনি পাঠকমনকেও বাস্তবতার নিষ্ঠুর রুপ সম্পর্কে একটু হলেও ভাবায়। থ্রিলার গল্পে এমন স্মুথ লেখনশৈলী পড়ার গতি আরো বাড়িয়ে দেয়। ভাইয়ার আগের কোনো বই পড়া না হলেও সামনে নিশ্চয়ই পড়তে হবে।

    প্রচ্ছদ প্রথম দেখায় ভালো না লাগলেও হাতে নেওয়ার পর ভালোই লেগেছে। বাঁধাই মোটামুটি ভালোই। দুই-একটা টাইপো বাদে তেমন ভুল চোখে পড়েনি।

    সবমিলিয়ে, মার্ডার মিস্ট্রি হলেও ফাস্ট পেইসড্ একটা বই ‘ওডিনের শেষ দিন’। পড়ালেখা কিংবা কাজের চাপে বই পড়া থমকে গেলে বইটা তুলে নিতে পারেন সানন্দে। সময়ও বেশি লাগবে না, বই শেষ করার আনন্দটাও পাবেন পুরো।

    বইঃ ওডিনের শেষ দিন
    লেখকঃ নজরুল ইসলাম
    প্রকাশনীঃ বাতিঘর
    মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০ টাকা

    রেটিংঃ ★★★★

  • Shaon Arafat

    প্রচ্ছদে কাহিনীর একটা ছাপ ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে, তথ্য বিভ্রট ঘটেছে। এটি মেজাজ খারাপ করার মতো বিষয়। এমন একটা প্রচ্ছদ ঠিক কি চিন্তা করে সিলেক্ট করা হলো, তা জানতে কৌতূহল হচ্ছে।

    লেখা ভালো। এডিটিংও খারাপ না। পড়তে বিরক্ত লাগেনি। সুখপাঠ্যই বলা যায়। কিন্তু যারপরনাই ক্লিশে। নতুনত্ব প্রায় শূন্য। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই একই জিনিস!

  • Anjan Das

    মাত্র ১৪৪ পৃষ্ঠার একটা ছোট্ট মার্ডার মিস্ট্রি।লেখনশৈলী ছিল চমৎকার। কোথাও বোর হই নি।খুব সুন্দর করে কাহিনী এগিয়ে নেওয়া হয়েছে অযথা আজেবাজে লিখে বইয়ের ব্যাপ্তি বাড়ানো হয় নি।শেষের দিকে ছোটখাট টুইস্ট ও আছে।ছোট গল্পটির মধ্যেও চরিত্র গুলো ও গল্পের প্রয়োজনে যথাযথ ছিল।অযথাই হুট করে কাউকেই গল্পের মধ্যে আনা হয় নি।
    তবে পুলিশ প্রসিডিওরাল বেশি পড়া হয় বলে এখানে ইনভেস্টিগেশন টার আরো বিস্তারিত বর্ণনা আশা করেছিলাম।সিসিটিভি ফুটেজ সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিসে পিবিয়াইয়ের তৎপরতা টা গল্পে আমার কাছে মনে হয়েছে ঠিকভাবে দেখানো হয় নি।
    এই বইটির প্রচ্ছদ টা ভাল লাগে নি একদম। বানান ভূল তো ছিলই এটা নিয়ে আর নতুন করে বলার নাই কিছু।

  • Zahidul

    “Identity was partly heritage, partly upbringing, but mostly the choices you make in life.”— Patricia Briggs, Cry Wolf
    -
    ❛ওডিনের শেষ দিন❜
    -
    জাভেদ তরফদার, একজন বড় মাপের ব্যবসায়ী এবং তরফদার গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক। তিনি হৃদরোগে মারা যাওয়ার পরে তার সন্তানদের ভেতরে শুরু হয় কোম্পানিতে জায়গা দখলের যুদ্ধ। এ সকল ঘটনার ভেতরেই একদিন জাভেদ তরফদারের স্ত্রী জানতে পারে যে জাভেদ তরফদার আসলে খুন হতে পারে।
    -
    আবুল হাসনাত, পিবিআইয়ের একজন হাই প্রোফাইল কেস স্পেশালিষ্ট, যে কিনা বর্তমানে ছুটিতে আছে। কিন্তু জাভেদ তরফদারের কেসের কারণে তাকে ছুটি শেষ হবার আগেই পিবিআইতে ডাকা হয়। এখন জাভেদ তরফদারের কী স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে নাকি অন্য কিছু আর আবুল হাসনাত এবং তার টিম এই কেসটি সমাধান করতে পারে নাকী তা জানার জন্য পড়তে হবে লেখক নজরুল ইসলামের মার্ডার মিস্ট্রি ভিত্তিক গল্প ❛ওডিনের শেষ দিন❜।
    -
    ❛ওডিনের শেষ দিন❜ একটি বইটি ছোট সাইজের মার্ডার মিস্ট্রি নভেলা যার মূল ঘটনা তরফদার পরিবারকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে। বইয়ের প্লট প্রথম থেকেই স্ট্রেট কাট এবং শেষ পর্যন্ত বইয়ের কোন জায়গা তেমন বাহুল্য মনে হয়নি। ❛ওডিনের শেষ দিন❜ গল্পের লেখনশৈলী বেশিরভাগ জায়গায় ভালোই ছিলো, তবে কিছু ক্ষেত্রে মনে হয়েছে প্লট অনুসারে লেখনশৈলীতে যেরকম ইমপ্যাক্ট হওয়ার কথা সেখানে সেরকম ইমপ্যাক্ট পড়েনি।
    -
    ❛ওডিনের শেষ দিন❜ বইয়ের চরিত্রগুলোর বেশিরভাগই তরফদার পরিবারেরই ছিলো, তাদের প্রায় সবাইকে গল্পে আলাদা শেড দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে লেখনশৈলীর মতো এ জায়গাতেও মনে হয়েছে কিছু চরিত্র আরো জোড়ালো হতে পারতো। শেষের দিকে কয়েকটি ঘটনার যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে সেটাও কতটা বাস্তবসম্মত হয়েছে তা প্রশ্ন করারই মতো। গল্পের প্লট অনুসারে এর পেসিং ভালোই লেগেছে, একবারে কাহিনিতে ঢুকে গেলে এক বসায় শেষ করার মতো করেই লেখা হয়েছে।
    -
    ❛ওডিনের শেষ দিন❜ বইটির প্রোডাকশন ওভারঅল অ্যাভারেজ মানের। বইয়ের প্রচ্ছদ খুবই মিসলিডিং লেগেছে, কাহিনির সাথে যার প্রায় কোন মিলই নেই। বইতে আদৌ কোন সম্পাদনা করা হলে সেটি ভালোভাবে করা হয়নি, প্রথমদিকের প্রায় প্রতিটি পেইজেই বানান ভুল বা টাইপো ছিলো। বইয়ের বাঁধাই আর কাগজের মান ইত্যাদি বলা যায় মোটামুটি।
    -
    এক কথায়, ডোমেস্টিক থ্রিলার এবং মার্ডার মিস্ট্রি ভিত্তিক বাংলা থ্রিলারে এক নতুন সংযোজন হচ্ছে ❛ওডিনের শেষ দিন❜। তাই যারা এ ঘরানার ব��� পড়তে পছন্দ করেন লেখনশৈলীগত কিছু ব্যপার ইগনোর করতে পারলে ❛ওডিনের শেষ দিন❜ বইটা পড়ে ফেলতে পারেন।

  • Samma Irtifa

    নর্স মিথলজি অনুসারে "ওডিন" হলো দেবতাদের রাজা। জ্ঞান, যুদ্ধ এবং মৃত্যুর দেবতা ওডিন। সেই সাথে তাকে বলা হয় "সর্বপিতা"। এই গল্পে সেই "ওডিন" কে?
    বইটা জনরা হিসাবে মার্ডার মিস্ট্রি এবং পুলিশ প্রসিডিউর দুটোই বলা যায়। কাহিনী খুব ক্লাসিক প্যাটার্নের। একটা পরিবারের কর্তার খুনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে গল্প। এই পরিবারের প্রায় প্রতিটি ব্যক্তি কোনো না কোনো ভাবে অপরাধ আর অন্ধকারে নিমজ্জিত। প্রত্যেকের কালো অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে পেঁয়াজের খোসার মত পরতে পরতে। ধনীর দুলালের বিগড়ে যাওয়া, সম্পদের জন্য হানাহানি কিংবা স্ত্রীর নিরব বেদনা সবকিছু যেন আমাদের বর্তমান সমাজের সাক্ষ্য বহন করছে।
    মূল তদন্ত কর্মকর্তা হাসনাত হলেও পার্শ্বচরিত্র সিদ্দিক যেন সর্বত্র বিরাজমান। এক নায়ক কেন্দ্রিক সর্বেসর্বা চরিত্র বর্জন ভালো লেগেছে। ফরেনসিকের ভূমিকায় ক্ষুদ্র চরিত্রায়নেও ছিলো পরিপাটি উপস্থাপন। শেষের দিকে নতুন চরিত্রের আগমনে টুইস্ট ছিলো অনেক।
    পুরো বইয়ে "ওডিন" সম্পর্কে কোনো কিছুই লেখা নাই। সব পাঠক যে ওডিন সম্পর্কে জানবে এমনটা না। তাই গল্পের এক ফাঁকে ওডিন নিয়ে দুই-চার লাইন লিখলে পাঠকের বুঝতে সুবিধা হতো লেখক কেন বইটার নাম দিয়েছেন "ওডিনের শেষ দিন"। আমার নিজেরও গুগল করে জানতে হয়েছে।
    বইটা খুব সাধারণ ধরণের। এটা নেগেটিভ দিক ভাবছেন? মোটেও না। রোলার-কোস্টার কিংবা হলিউড টাইপ দৌড়-ঝাপ না করে বাস্তবতায় পূর্ণ রাখাটা আমার কাছে ভালো লেগেছে। অযথা কাহিনী টেনে দীর্ঘ না করে প্লটের প্রয়োজনমত দেড়শো পেজে গল্প শেষ করায় প্রতি পাতা ছিলো টানটান উত্তেজনাপূর্ণ।
    "হু ডান ইট" এবং "হাউ ডান ইট" দুটো প্রশ্নের উত্তর খোঁজার সাথে দারুন একটা অবসর কেটে যাবে বইটা পড়ে।

  • Mueed Mahtab

    ভালো লাগেনি!

  • Tasmin Nisha

    জাভেদ তরফদার একজন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের মালিক। লোকজনের কাছে তিনি সৎ হিসেবেই খ্যাত। স্ত্রী আকলিমা বেগম ও দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে তার জীবন সুন্দর হওয়ার কথা থাকলেও বৃদ্ধ বয়সে এসে দুই ছেলের সম্পত্তি নিয়ে কাড়াকাড়ি দেখে জীবন পার করতে হচ্ছে। বয়স তাঁর পঁচাশিতে, প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। তবুও অফিসে শেষ দিনগুলো কাটাতে চান বলে অফিসে তার নিজের রুমে সে সারাদিনই থাকে। এই এক সুযোগে একদিন এক অপরিচিত লোক তার অফিস রুমে এসে তার মুখে রুমাল চেপে ধরে হত্যা করে। যদিও সবাই এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবেই ধরে নিয়েছিল।


    বাবা মারার যাওয়ার পর ছেলেমেয়েদের তেমন বিচলিত হতে দেখা গেল না। বড় ছেলে আকিব তরফদার ও ছোট ছেলে জাহিদ তরফদার আছেন ভাগ বাটোয়ারার চিন্তা নিয়ে। বোনদেরও বাবার মৃত্যু নিয়ে তেমন মাথা ব্যথা নেই। এরই মাঝে মোহসিন রেজা নামের ইন্টার্ন ডাক্তার মিসেস তরফদারকে ফোন দিয়ে বলেন তার স্বামীর মৃত্যু স্বাভাবিক ভাবে হয়নি বলে তার সন্দেহ হচ্ছে। মিসেস তরফদার দেরি না করে সোজা পুলিশ অফিসারের কাছে চলে গেলেন যেন তার স্বামীকে আদৌও হত্যা করা হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে বের করা‌।

    তদন্ত শুরু হলো, দায়িত্ব পড়লো পিবিআই অফিসার আবুল হাসনাতের উপর। তদন্ত করে জানা গেল আসলেই তরফদার সাহেবকে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু কেন এই শেষ বয়সে এসে তাকে মারা হলো? পুরোদমে কেস ইনভেস্টিগেশন করতে লাগলো হাসনাত ও তার সহযোগীরা। কিন্তু কোনো সুরাহা খুঁজে পাচ্ছে না হাসনাত। তার সহযোগী সিদ্দিককে সে পাঠালো তরফদার সাহেবের গ্ৰামের বাড়িতে কিন্তু গ্ৰামের বাড়ি গিয়ে জানা গেল তরফদার সাহেবের অবৈধ সন্তান ছিল যে বেঁচে আছে কিনা এবং থাকলেও বা কোথায় কেউ বলতে পারে না। কেসের সুরাহা বলতে গেলে হতোই না যদি হাসনাত শেষে সিসিটিভি ফুটেজে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য না করতো।


    ছোট্ট পরিসরে লেখা একটি রিভেঞ্জ থ্রিলার হলেও কিছু মিসিং আছে এমন মনে হয়নি। হাসনাত ও তার সহযোগীদের কেস নিয়ে ইনভেস্টিগেশনের অংশটুকু বেশ উপভোগ্য। টুইস্টের উপর যে টুইস্ট দেওয়া হয়েছে তা ভালোই ছিল। তবে ফ্ল্যাপের সাথে কাহিনীর দূর দূরান্তে কোনো সংযোগ খুঁজে পেলাম না।