Title | : | মনে আছে? মনে থাকবে? |
Author | : | |
Rating | : | |
ISBN | : | 8172151853 |
ISBN-10 | : | 9788172151850 |
Language | : | Bengali |
Format Type | : | Paperback |
Number of Pages | : | 138 |
Publication | : | First published January 1, 1993 |
মনে আছে? মনে থাকবে? Reviews
-
গতানুগতিক সুনীলের লেখা না।
আমার কাছে মনে হয়েছে অনেকটাই হুমায়ুন আহমেদের আদলে ঢুকে গিয়েছে।
অন্যসব সুণীলের লেখার মতো মন কে ছুঁয়ে গেলো না। -
চির যুবক, সাতাশেই আঁটকে আছে বয়স। বেকার, ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে। টাকা পয়সা নিয়ে ভাবে না। ধার করে, দু একটা ছাত্র পড়িয়ে, অনেক সময় টিকেট ছাড়া ভ্রমণ করেই মিটিয়ে নেয় নিজের ইচ্ছা পূরণের খরচটা। - যাদের সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাথে পরিচয় আছে তারা ঠিকই বুঝে নিয়েছেন চরিত্রটি তারই সৃষ্টি বিখ্যাত "নিললোহিত" বাবু।
পড়ছিলাম "মনে আছে, মন থাকবে" বইটি। ছোট ১৩৮ পাতার একটা গল্প, কিন্তু গল্পের নামের স্বার্থকতা আছে। মনে থাকবে অনেক দিন। গল্পের শুরুতেই নিললোহিত কে পাওয়া যায় ডেহরি-অন-শোল রেল স্টেশনের পাশে বসে চা খেতে। সেখানেই তিনি শুনতে পান খবরের কাগজের তার নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে বাড়ি যেতে বলা হয়েছে। দিদিমণি অসুস্থ। শেষ সময়ে দেখতে চান। যে টইটই করে উদ্দ্যেশ্যবিহীন ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসে, তাকে খুঁজে বের করতে হলে এ ছাড়া কি বিকল্প আছে?
খবর পেয়েই চলে গেল বাড়ি। যদিও হাতে টাকা ছিলনা। বিদেশ বিভূঁইয়ে ধার করার মতও কেউ নাই। তাই ভুল ট্রেনে উঠার ভান করে অসুস্থ সেজে ঘুমিয়ে পড়ল। টিকিট চেকারের হাতে ধরা না পরলেও সদ্য পাশ করা সুন্দ��ী ডাক্তার ঝিলিকের হাত থেকে রেহাই পেলনা। ইচ্ছের বিরুদ্ধেই দু-দুটো জরের ট্যাবলেট খেয়ে নিতে হল। আর ঘুমিয়ে পড়ল রঙিন স্বপ্ন দেখতে দেখতে।
বাড়ী পৌঁছেই দিদিমণির সাথে দেখা। মৃত্যুর আগে দিদিমণি এক বিশেষ গোপন কাজের দায়িত্ব দিলেন নিলুকে। এতদিন পর এই কাজও কি সম্ভব? মৃত্যুপথযাত্রীর শেষ ইচ্ছা রাখতে হয় বলেই সে কথা দিয়েছে। আর কিছু না হোক এই ছুঁতোয় বাংলাদেশেটা ঘুরে আসা হবে। যেখান থেকে দেশ বিভাগের পর চলে এসেছিল তার পূর্বসুরিরা। এতবছর পর তাকে আবার খুঁজে বের করতে হবে তাদের ভিটাবাড়ী।
গল্পে ঢাকার বর্ননা পাওয়া যায় সুন্দর ভাবে। এজন অপরিচিতের মুখে চিরপরিচিত শহরের গল্প শোনাটা খুবই আনন্দের। আছে ধানমন্ডি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বনানী, সদরঘাটের বর্ননা। বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তার বর্ননা যেমন আছে, তেমন আছে ঘাটে নিজের ব্যাগ চুরির ঘটনাও। দুই বাঙলা বিভক্তি নিয়ে লেখকের নিজস্ব ভাবনা প্রকাশ পেয়েছে, এসেছে ফারাক্কা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ, কলকাতা আর ঢাকা শহরের মাঝে নির্মল তুলনা।
অনেক ঝামেলা শেষে ঠিক ঠিক পৌছেছিলেন তাদের বাড়ীতে। অবশ্য এখন আর তাদের নেই। "এনিমি" প্রোপার্টি হিসাবে সরকার দখল নিয়ে থানা বসিয়েছে। সেই থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খুব খাতির যত্ন করছেন। সবার চোখের আড়ালেই সে পরিকল্পনা করে যাচ্ছে কিভাবে দিদিমণিকে কথা দিয়ে আসা কাজটা করা যায়। কিন্তু কিভাবে?
এদিকে পুলিশ অফিসারে মেয়ে মরিয়মকে ভালো লেগে যায়। খুব ভালো গান গায়। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশাল ভক্ত। ইচ্ছা ছিল শান্তি নিকেতনে ভর্তি হবে। কিন্তু তার যে দুটি পা নষ্ট হয়ে গেছে পোলিওতে। নিললোহিত তাই তাকে গল্প শোনায় দিকশূন্যপুরের। কল্পনার ডানা মেলে উড়তে শেখায় তাকে। উপর থেকে দেখায় বাংলার অপার সৌন্দর্য, আর অদেখা সব জায়গা। কাজ শেষে বিদায় বেলায় শুধু প্রশ্ন, এই বিশাল ভ্রমনের সঙ্গী নিলুকে মরিয়ম কি মনে রাখবে?