Title | : | Universal Message of the Bhagavad Gita Vol 13 |
Author | : | |
Rating | : | |
ISBN | : | 8394883710 |
ISBN-10 | : | 9788394883713 |
Format Type | : | Hardcover |
Number of Pages | : | 1500 |
Publication | : | First published January 1, 2000 |
Universal Message of the Bhagavad Gita Vol 13 Reviews
-
ভগবদগীতাকে কেবলই একটা "পবিত্র ধর্মগ্রন্থ" হিসেবে গণ্য করলে আমার পক্ষে এই বই পড়া সম্ভব ছিল না। আমি ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি, কিংবা না-করি— এইসব কথা আজকের আলোচনায় প্রাসঙ্গিক নয়। তাছাড়া, ঈশ্বরে বিশ্বাস করা আর ধর্মের আচার-আচরণ পালন করা, দুটো আলাদা জিনিস। আমার মূল আপত্তি আধুনিক হিন্দুধর্মের আনুষ্ঠানিক এবং নির্দেশমূলক বৈশিষ্ট্য নিয়ে। এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে, এটা করলে পাপ হবে, ওটা খেলে সর্বনাশ হবে, সেটা না-করলে আমাকে এবং আমার চোদ্দোগুষ্টিকে নরকের ননস্টিক কড়াইতে ডিপ-ফ্রাই করা হবে। তারপর শূলে চড়িয়ে হাল্কা আঁচে শিককাবাব বানানো হবে।
ছোটবেলায় যা-কিছু ধর্মপালন করেছি, যা-কিছু "পাপ-পূণ্য" অর্জন করেছি, সেইসব দায় আমার বাপ-মা'র। তাঁরা যেমন বুঝিয়েছেন, তেমন চলেছি। কিন্তু এখন আমার নিজস্ব অল্পস্বল্প জ্ঞানগম্যি হয়েছে। ডিপ-ফ্রাই হওয়ার ভয়টা কেটেছে। আমার যৎসামান্য জ্ঞান দিয়ে আপাতত আমি পরিষ্কার বুঝতে পারছি, গেরুয়া রঙের ধুতি পরে এবং সাদা পৈতা গলায় ঝুলিয়ে ব্যাটা পুরোহিত, ভগবানের ভয় (এবং পুণ্যের লোভ) দেখিয়ে, ধান দুব্বো ফুল বেলপাতা গঙ্গাজল ছুঁড়ে, অং বং চং ঘোড়াড্ডিম মন্তর আউড়ে, ঘণ্টা নাড়িয়ে— স্রেফ আমাকেমুরগিমোরগ বানাচ্ছে। ব্যাটাকে আবার দক্ষিণাও দিতে হবে। ১০১ টাকা ওম্ হরিবোলায় নমঃ!
দর্শন আমার খুব পছন্দের বিষয়। কিন্তু তৃতীয়-বিশ্বের বেশিরভাগ উজবুকের মতো আমার মগজের মাইক্রোচিপে একটা বীজমন্ত্র প্রি-ইনস্টল করা আছে— "গান হোক বা গামছা, সিনেমা হোক বা শিঙ্গাড়া, যাহা কিছু পশ্চিম-বিশ্বের তাহাই পরম উপাদেয়"। তাই প্রাচীনকালের সক্রেটিস থেকে শুরু করে আধুনিক কালের ডোনাল্ড ট্রাম্প পর্যন্ত পশ্চিমী বিশ্বের যত্তো বিখ্যাত দার্শনিক আছেন, তাঁদের সমস্ত সিদ্ধান্ত, অনুসিদ্ধান্ত, প্রতিপাদ্য, সম্পাদ্য, গোখাদ্য, ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ে মোটামুটি কাজ-চালানোর মতো (এবং নিজেকে জাহির করার মতো) আইডিয়া জোগাড় করে ফেলিচি আমি।
কিন্তু কেউ যদি হঠাৎ জিজ্ঞেস করে : সাংখ্য দর্শন কাকে বলে? শূন্যবাদ কী জিনিস? কর্মযোগ বিষয়টা কী? শঙ্করাচার্য কে ছিলেন? — আমি তখন ভীষণ নাক কুঁচকে এবং প্রবল দাড়ি চুলকে জবাব দিই : "হামি টো পিওর নাস্টিক আছি, ম্যান। এই সকল রিলিজিয়াস বুলশিট হামি অট্যন্ট ঘৃণা করি। যডিও হামার গায়ের রং ব্রাউন আছে এবং হামার ফাদারের গায়ের রং আরো বেশি ব্রাউন আছে, কিন্টু মনে মনে হামি পারফেক্ট সাহেবের বাচ্চা আছি! রিয়েল সাহেবডের চেয়েও বেশি খাঁটি সাহেব, হুঁ হুঁ বাওয়া!"
তবু মাঝে মাঝে ভিতরে ভিতরে এট্টু লজ্জা লাগে। উপমহাদেশের মানুষ হয়ে উপমহাদেশীয় দর্শনের ব্যাপারে প্রায় কিসুই জানিনা। বাকি বইপত্তর বাদ দিলাম, গীতাটাও ভালো করে পড়িনি। দোষ যদিও সম্পূর্ণ আমার নয়। আবহমানকাল ধরে আমাদের দেশে দর্শনের সঙ্গে ধর্মকে শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অথচ আজকের দিনে প্রচলিত হিন্দুধর্মের আচার বিচার সংস্কার বিশ্বাসের সঙ্গে বেদ-উপনিষদের দার্শনিক বিষয়বস্তুর প্রায় কোনো সম্পর্কই নেই। গোটা মহাভারতে একবারের জন্যেও মূর্তিপূজার উল্লেখ নেই। আরো কিছু কিছু ব্যাপার আছে যেগুলো লিখলে কালকে সকালে আমার বাড়িতে উটকো লোকজন ঝামেলা করতে চলে আসবে এবং আমাদের বাড়ির শান্তিপ্রিয় বিড়ালগুলোকে খামোখা হ্যারাস করবে।
টো হামি গীটা ডিয়েই...
ওহ সরি! তো আমি গীতা দিয়েই প্রাচ্য-দর্শনের চর্চা শুরু করবো ঠিক করলাম। কিন্তু গীতার তো হাজার হাজার সংস্করণ বাজারে পাওয়া যায়। আমার নিজের বাড়িতেই ঠাকুরের সিংহাসনের পাশে ছোট, মেজো, সেজো, দামড়া— এইরকম বিভিন্ন সাইজের হরেক কিসিমের গীতা রাখা আছে (প্রতিটার উপর একটা করে তুলসিপাতা দেওয়া, তুলসিপাতা অ্যান্টিসেপটিক কিনা)। এর মধ্যে কোনটা পড়বো? বাড়ির গীতাগুলো একটাও পছন্দ হলো না। ওগুলো পুজো করার জন্যেই ঠিক আছে।
পড়বো যখন ভালো করেই পড়তে চাই। বঙ্গানুবাদ, বিশদ টীকা, বিশ্লেষণ সহ। বাড়ির কাছে রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে দেখলাম স্বামী রঙ্গনাথানন্দের লেখা তিনখণ্ডের গীতা বিক্রি হচ্ছে। বইটা উল্টেপাল্টে দেখে পছন্দ হলো। তিনখণ্ড একসঙ্গে কিনে ফেললাম। কিন্তু বাংলা অনুবাদটা নয়, মূল ইংরিজি সংস্করণটা। এই ঘটনা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের।
অবশেষে আজকে তিনখণ্ডের প্রায় ১৫০০ পৃষ্ঠার এই গীতাপাঠ শেষ করলাম (গীতা "পড়লাম" বলতে নেই, পাপ হয়)। যে-সময়ে এইসব প্রাচীন বইপত্র রচিত হয়েছে তখনও যেহেতু "হিন্দু" শব্দটির কোনো অস্তিত্ব ছিল না, তাই হিন্দু-দর্শনের বদলে "প্রাচীন ভারতীয় দর্শন" বলা উচিত হবে। প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের অনেকগুলো শাখা ছিল। এমনকি একাধিক নাস্তিক্য দর্শনের খোঁজও পাওয়া যায় (যেমন - "চার্বাক দর্শন")। তবে, প্রাচীন ভারতীয় দর্শনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মেইনস্ট্রিম ছিল বেদান্ত দর্শন।
বেদান্ত দর্শন আয়তনে বিপুল, বিশাল। বেদ, উপনিষদ— এগুলো সবই বেদান্ত দর্শনের অন্তর্গত। এই বিশাল বেদান্ত দর্শনের অনেক অনেক লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে যদি একবাটি ক্ষীর বানানো হয়, তবে সেটা হলো ভগবদগীতা। মাত্র ৭০০টা শ্লোক আছে গীতাতে। গীতা কিন্তু মহাভারতের অন্তর্গত একটা অংশ, আলাদা করে লেখা হয়নি। মহাভারতে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে অর্জুন এবং শ্রীকৃষ্ণের মধ্যে কিছু দার্শনিক আলাপ-আলোচনা হয়েছিল। সেই আলোচনার অংশটিকে আমরা আলাদা ভাবে "গীতা" নামে চিনি। কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল দুজনের মধ্যে?
অর্জুন বলেছিলেন, আমি যুদ্ধ করবো না। যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো, তারা সবাই আমার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, কেউ কেউ আমার গুরুজন। এদের আমি কীভাবে হত্যা করবো? এদের মেরে যুদ্ধে জেতার চেয়ে ভিক্ষা করে খাওয়া ভালো। ইয়ে লাফড়া আপুন সে নেহিচ হোয়েঙ্গা, বীড়ু! এই বলে তিনি হাতের অস্ত্র ফেলে দিলেন। চোখের জল মুছতে মুছতে শোকে আচ্ছন্ন হয়ে মাটিতে বসে পড়লেন (তখনকার দিনে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করতে হতো। বসে পড়ার অর্থ হলো "ওয়াক-ওভার" ঘোষণা করে দেওয়া)। শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন অর্জুনের সবচেয়ে কাছের বন্ধু ("বীড়ু" = "বেস্ট ফ্রেন্ড")। তিনি ছিলেন গোটা মহাভারতের সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষও বটে। এই শোচনীয় মানসিক অবস্থা থেকে অর্জুনকে বের করে আনতে হবে তাঁকে।
অর্জুনের মতো নিখুঁত মহাবীর, মহাভারতের সবচেয়ে গ্ল্যামারাস নায়ক, আজকের দিনের pseudo-psychology'র ভাষায় - "Alpha Male", তাঁর মতো মানুষও কিনা শোকে-দুঃখে অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন! নিরাশার সমুদ্রে ডুবে গেছিলেন। নিজেকে চরম অসহায় মনে করছিলেন। তাঁর মনে হচ্ছিল, এর চেয়ে তো মরে যাওয়া ভালো। নিজেকে কীভাবে সামলাবেন তার কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অর্জুনের মতোই ছন্নছাড়া মানসিক অবস্থা তো আমাদেরও হয়! কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ না হোক, আমাদের নিজেদের জীবনটাও একটা যুদ্ধ ছাড়া আর কী? কখনও বাস্তব পরিস্থিতি বাঁশ দ্যায়, আবার কখনও মরীচিকার মতো ভ্রান্ত মোহ এসে চাবুক মারে। আর যুদ্ধক্ষেত্রের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আমরা যন্ত্রণায় দগ্ধ হই।
স্বামী বিবেকানন্দ গীতাকে বলেছিলেন "প্র্যাকটিক্যাল বেদান্ত"। মানে গীতার দর্শন স্রেফ যুক্তির মারপ্যাঁচ নয়, আমাদের নিজেদের জীবনে এই দর্শনকে প্রত্যক্ষভাবে কাজে লাগানো সম্ভব। এবং গীতার দর্শন আদ্যোপান্ত একটি পজিটিভ দর্শন। আজকের পৃথিবীতে নায়িলিজম যেন একটি ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি বলি আমি একজন অপ্টিমিস্ট, ভবিষ্যত নিয়ে আমি আশাবাদী, তার মানে আমি যথার্থ "আধুনিক" মানুষ নই। অথবা আমি একজন সুবিধাবাদী "এলিট"।
দেশদুনিয়ার সমস্য��� নিয়ে যিনি যতো বেশি ঘ্যানর-ঘ্যানর প্যানর-প্যানর করবেন, তিনি ততো বেশি "সমাজসচেতন"। দায়দায়িত্বহীন এই ঘ্যানর-ঘ্যানরের দ্বারা মূল সমস্যার কিন্তু দুই ইঞ্চিও সমাধান হয়না। নায়িলিজমগ্রস্ত এই পলায়নী-মনোবৃত্তির বিপরীতে, বিষাদাচ্ছন্ন অর্জুনের উদ্দেশ্যে শ্রীকৃষ্ণ ঠিক সেই কথাটাই বলেছিলেন যেটা একজন প্রকৃত বন্ধুর বলা উচিত : তস্মাৎ উত্তিষ্ঠ কৌন্তেয়! —হে অর্জুন, উঠে দাঁড়াও! আর যাই করো, ভগ্নহৃদয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থেকো না। ব্রো, বসা অবস্থা থেকে আগে উঠে দাঁড়াও! তারপর দেকচি কি করা যায়...
যেভাবেই হোক, অন্তত খাড়া হয়ে একটিবার উঠে দাঁড়ানোটা ক্যানো উচিত, ক্লীব হয়ে বসে থাকার মধ্যে যে কোনো গৌরব নেই, রথের চাকা (আমাদের ক্ষেত্রে কোলবালিশ) জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদলে যে সমস্যার সমাধান হয়না, দুর্বলচিত্ত ভীরু দ্বিধাগ্রস্ত মানুষরা যখন ক্ষমা, করুণা, দয়া, অহিংসা, ইত্যাদি সুইট অ্যান্ড বিউটিফুল জিনিসের গুণকীর্তন করে, তখন যে সেটা কতটা হাস্যকর শোনায়, এবং সবচেয়ে বড় কথা, কখনও কখনও যে সত্যিই আমাদের কঠোর হওয়া জরুরি, ভদ্রতার পোশাকটা খুলে আলমারিতে ঢুকিয়ে রাখা জরুরি, "অভদ্র" হওয়া জরুরি, এই কথাগুলো অর্জুনকে বলেছিলেন তাঁর প্রিয় বন্ধু। ইনি আমাদের পরিচিত সেই বৃন্দাবনের বংশীবাদক লেডিকিলার কেষ্টঠাকুর নন! রাইট নাউ, ড্যাম ইট, হি ইজ অন ফায়ার!
অর্জুনের এই হতবুদ্ধি অবস্থা দেখে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে সান্ত্বনা অফার করেননি। কিংবা, Cheer up, dude! You can do it, man! Oh come on, grow some balls, will ya! এইসব ছাগলের আলাপ করেননি। তিনি বলেছিলেন : শোন ভাই, অহিংসা, ক্ষমা, দয়া— এইসব কাজ দুর্বলদের মানায় না। এগুলো শক্তিশালী মানুষের কাজ। যার নিজেরই হাত পা কাঁপছে, চোখ দিয়ে জল বেরোচ্ছে, সে অন্যকে অহিংসা দেখাবে? হিহি! গান্ধিজির মুখেও আমরা একই কথা শুনতে পাই। নেলসন ম্যান্ডেলার মুখেও। মার্টিন লুথার কিংয়ের মুখেও। এঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন তথাকথিত অহিংসার পূজারী।
তারপর তিনি অর্জুনের সামনে বেদান্ত দর্শনের যাবতীয় জ্ঞানভাণ্ডারকে উন্মুক্ত করে দিলেন। বুদ্ধি দিয়ে, যুক্তি দিয়ে, বোধ দিয়ে, প্র্যাকটিক্যাল চিন্তা দিয়ে, দীর্ঘদিন ধরে এই দর্শনকে গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি বললেন, এই নাও, তোমাকে সবকিছু বললাম। এবার তুমি নিজেই বিচার করে দ্যাখো। বেদান্ত দর্শনের এটা একটা অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য। "বৃহদারণ্যক" নামের একটা বিখ্যাত উপনিষদ আছে। সেখানে একটা বৈপ্লবিক কথা বলা হয়েছে : "বেদো অবেদো ভবতি"। এর মানে হলো, আমার নিজের অনুভূতির, নিজের বিচারবুদ্ধির দাম বেদের চেয়েও বেশি। তুমি আগে তোমার অস্থির মনটা স্থির করো, তারপর সবকিছু শুনে দ্যাখো, তারপর যদি বেদান্তের বিচার পছন্দ হয়, তাহলে রাখো। নইলে ফেলে দাও। কুছ পরোয়া নেহি। আমার মনে হয়েছে, এই বিস্ময়কর ফ্লেক্সিবিলিটি বেদান্ত দর্শনের সবচেয়ে বড়ো বৈশিষ্ট্য। এর সবচেয়ে বড়ো শক্তি। পৃথিবীর আর কোনো দর্শন নিজের ব্যাপারে এরকম নির্ভীক ঘোষণা করেছে বলে আমার জানা নেই। "বেদো অবেদো ভবতি"। আমার সিদ্ধান্তের সামনে বেদও "অবেদ" হয়ে যায়।
"রোজ সকালবেলা, ভগবদগীতার সুবিশাল এবং মহাজাগতিক দর্শনের গভীরে, আমি আমার বুদ্ধিকে অবগাহন করাই। এই গ্রন্থ পড়ার পরে, আধুনিক পৃথিবী এবং এই পৃথিবীতে রচিত সাহিত্যকে মনে হয় অতি ক্ষুদ্র, অতি নগণ্য।" এই কথা বলেছিলেন হেনরি ডেভিড থোরো, তাঁর বিখ্যাত "ওয়ালডেন" বইতে (বাংলা অনুবাদটা আমার নিজের)। আমি যদিও থোরো-র এই কথাটা মানি না, তবু একটা বিষয় বুঝতে পারি। থোরো-র মতো transcendentalist মানুষ, যিনি নিজের যুগের চিন্তাভা���নার তুলনায় এগিয়ে ছিলেন, তাঁর মননেও গীতার দর্শন এতোটা মৌলিকভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল।
আজকে সকালে গীতা শেষ করে আমারও মনে হয়েছে, যতটুকু ভেবেছিলাম, আমার মনের উপর গীতার "পজিটিভ" দর্শনের প্রভাব তার চেয়ে অনেকটাই বেশি পড়েছে। আমারও মনে হয়েছে, মানুষের জীবনের বোধহয় সবচেয়ে বড়ো কর্তব্য, যতবার বসে পড়ছি, ততবার উঠে দাঁড়ানো। যতবার, ততবার। যতবার, ততবার।
উত্তিষ্ঠত! উত্তিষ্ঠত!
(যদি কেউ নিছক ধর্মীয় অনুষঙ্গ বাদ দিয়ে গীতা পড়তে চায়, আমি তাকে স্বামী রঙ্গনাথানন্দের লেখা এই সংস্করণটি পড়তে রেকমেন্ড করছি। বইটাকে "লেখা" বললে ভুল হবে। হায়দরাবাদের রামকৃষ্ণ মিশনে দীর্ঘ দুইবছর ধরে প্রতি সপ্তাহে সম্পূর্ণ গীতার বিশ্লেষণ করে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তিনি। বইটি সেই বক্তৃতামালার লিখিত রূপ। মৌখিক আলোচনা হওয়ার কারণে এই বিশ্লেষণে দুর্দান্ত একটা গতিশীলতা এসেছে। তাছাড়া, স্বামী রঙ্গনাথানন্দের উদার চিন্তাভাবনা এবং উজ্জ্বল পাণ্ডিত্যে মুগ্ধ হয়েছি আমি। সবমিলিয়ে, আমার দেখা এটিই শ্রেষ্ঠ গীতা, এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই!
বইটার একটা বাংলা অনুবাদ আছে। এমনিতে আমি কোনোকিছুর বাংলা অনুবাদ পাওয়া গেলে সেটা পড়াই পছন্দ করি। কিন্তু এই বইটার ক্ষেত্রে মূল ইংরিজি ভার্শনটা পড়লেই বোধহয় বেশি ভালো হবে। স্বামী রঙ্গনাথানন্দের বক্তব্যের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং ছন্দটা উপভোগ করা যাবে।)
. -
This is an insightful analysis of the Bhagavad Gita from the modern point of view. Swami Ranganathanand ji has excellently described the verses keeping in mind our current society and current style of living. An excellent read for anyone who wants to understand basics of life and elevate one's consciousness towards higher goal in life.
-
The most readable introductory and modern exposition of the Bhagavad Gita.
Swami Vivekananda (
Complete Works of Swami Vivekananda) said: The Bhagavad Gita may be looked upon as the last of the Upanishads. The Gita is like a bouquet composed of the beautiful flowers of spiritual truths collected from the Upanishads (2.5.10)... The Bhagavad Gita is the best commentary we have on the Vedanta philosophy (2.6.1)... The Gita is the gist of the Vedas. It is not our Bible; the Upanishads are our Bible. The Gita is the gist of the Upanishads and harmonizes the many contradictory parts of the Upanishads (9.3.6).
The most unique and brilliant feature of Swami Ranganathananda's commentary is that it draws upon the works of eminent national and international poets, scientists, authors, and historians. This book lucidly brings out the essence of each verse of the Bhagavad Gita.
Anyone interested in a modern and contemporary rendering of the Bhagavad Gita must read this book. -
All 3 volumes are explained with beautiful antidote.
-
Best commentary on the Bhagawad-Gita in modern times. A must read for all humanity.