Title | : | জয় বাবা ফেলুনাথ (ফেলুদা, #7) |
Author | : | |
Rating | : | |
ISBN | : | 8170668689 |
ISBN-10 | : | 9788170668688 |
Language | : | Bengali |
Format Type | : | Hardcover |
Number of Pages | : | 96 |
Publication | : | First published January 1, 1975 |
জয় বাবা ফেলুনাথ (ফেলুদা, #7) Reviews
-
জয় বাবা ফেলুনাথ একদম পুজোর সময়ের গল্প, তবে এতে ফেলুদার গোয়েন্দাগিরী বাংলাতে নয়, ঘটে কাশীর সরু গলিগুলোর মধ্যে। দশাশ্বমেধ ঘাট আর বিশ্বনাথের শহর কাশীতে ফেলুদাদের যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল পুজোর ছুটি কাটানো, কিংবা লালমোহনবাবুর ভাষায় “কাশী, (ফেলুদার তদন্তের) কেস আর (কাশীতে ঘুরে প্লট জোগাড় করে তা নিয়ে লিখে লালমোহন বাবুর) ক্যাশ” জোটানো। শেষ পর্যন্ত যা হয়, তা তোপ্সের বর্ণনায় –
বেনারস গিয়ে লালমোহনবাবু গল্পের প্লট পেয়েছিলেন ঠিকই; তবে ফিরে আসার দুমাস পরে বড়দিনে তার যে রহস্য উপন্যাসটা বেরোল, সেটার সাথে টিনটিনের একটা গল্পের আশ্চর্য মিল।
ফেলুদার কিন্তু গিয়ে সত্যিই লাভ হয়েছিল। তা না হলে অবিশ্যি এই বইটাই লেখা হত না। ফেলুদার জীবনে সবচেয়ে ধুরন্ধর ও সাংঘাতিক প্রতিদ্বন্দীর সঙ্গে তাকে এই বেনারসেই লড়তে হয়েছিল। ও পরে বলেছিল – ‘এইরকম একজন লোকের জন্যই অ্যাদ্দিন অপেক্ষা করছিলাম রে তোপ্সে। এ সব লোকের সঙ্গে লড়ে জিততে পারলে সেটা বেশ একটা টনিকের কাজ দেয়।’
গোয়েন্দা সাহিত্যে নায়কের কৃতিত্বের সিংহভাগই যে খলনায়কের কারণেই, জয় বাবা ফেলুনাথ এর মগনালাল মেঘরাজ তার অখন্ডনীয় প্রমাণ। গল্পটা কিভাবে শেষ হয়, তা তো জানাই। কিন্তু প্রথম আর শেষের মাঝখানে ঠাসা যেই টানটান উত্তেজনা, তাতো আর সেটি না পড়লে বোঝার নয়। তাই যারা এখনো এই গল্পটি পড়েননি তারা অতিসত্বর পড়ে ফেলুন ফেলুদার আর মগনলালের রোমহর্ষক সংঘর্ষের কাহিনী – জয় বাবা ফেলুনাথ । -
It is not easy to write a very compelling and well-crafted whodunnit thriller within the space of mere 100 pages. Only Arthur Conan Doyle, Agatha Christie, Daphne Du Maurier or one of those legends have pulled it off. And now, I feel proud to add another name to the list.
That name is Satyajit Ray, possibly the finest filmmaker of India, a legend in his own right who defied all conceivable boundaries of our cinema, long lambasted for its populism and unabashed splendour and little else. Few, however, also know about the other facet to this leading realist cinematic storyteller from our country, that of a raconteur with a vivid, infectiously colourful imagination, as evidenced in stories that he wrote for children and grown-ups alike. And this slim thriller, one of the series of detective thrillers that he penned, featuring his own fiendishly smart Holmes, Pradosh Mitter, better known as Feluda, is really an exemplary read from cover to cover.
Feluda and his trusty companions Topshe and Lalmohan 'Jatayu' Ganguly are in Banaras to witness the last, festive day of the Durga Puja. But the scent and smoke of a thickening mystery can never be too distant from where Feluda steps in. There is a much-celebrated and worshipped godman called Machchli Baba, there is a boy lurking on roofs who imagines himself as the hero of an adventure book itself and more troublingly, there is a precious idol of Lord Ganesha that has disappeared without a clue. Will Feluda solve it? Won't he solve it?
Those are questions that are best left to the avid, hungry reader to unravel but I would recommend everyone, especially those who love their whodunnits, to sit back and soak in the dense, atmospheric pleasure that Mr. Ray plunges us into, without any effort. The old-since-time-immemorial city of Banaras, with its bustling streets and enticing sweetshops, the sweep of its riverside ghats and the fervour of festivities is as much as a character in the proceedings. And the veteran storyteller also throws in a stellar cast of intriguingly enigmatic characters, people whom you would be willing to trust but you cannot because Feluda's relentlessly questioning spirit makes you an amateur sleuth as well.
That brings us to our congenial yet coolly intelligent Feluda himself, who, despite the incredible intelligence and uncanny intuition, is very much a believable person, almost like any other young man burning with the same curiosity. He is aided brilliantly by Topshe, who narrates the mystery credibly and the entertainingly non-plussed Jayatu, who is also believable in his comic predicament. But he is after all the hero of this tale and it is a heady thrill to see him decipher clues with disarming ease.
Anyone who wants to discover this lesser-known side to the greatest filmmaker of India should pick up this slim volume and devour it like a bowl of sweetmeats from the streets of Banaras. -
পুজোর ছুটি আর ফেলুদার নতুন এক অ্যাডভেঞ্চার। এবারের অ্যাডভেঞ্চার বেনারসে। যদিও অ্যাডভেঞ্চারের উদ্দেশ্যে তারা বেনারসে আসেনি, ঘোরাটাই মেইন উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু 'ঢেকি স্বর্গে গেলেও নাকি ধান ভাংগে' কথাটার সার্থকতা প্রমানেই যেন ফেলুদার কোলে কেস এসে ধরা দিল। যদিও জটায়ুর নজর ছিল মাছলি বাবার দিকে। সেখানেই ফেলুদার কথা হয় বিখ্যাত ব্যবসায়ী উমানাথ ঘোষালের সাথে। সে শোনায় অবাক করা এক কাহিনী। এক গনেশ মুর্তির কারনেই নাকি তাদের ব্যবসার এত পসার। কিন্তু এখন এই মুর্তিই খোয়া গেছে পুজোর ঠিক আগে আগে। ফেলুদাকে মুর্তি খুজে দিতে হবে। কিন্তু এই মুর্তি খুজতে গিয়ে প্রানটাই না খুয়ে বসতে হয় ফেলুদার গ্যাংকে। যদিও তাদের সূত্র দিয়ে সাহায্য করে উমানাথের ছেলে রুকু ওরফে ক্যাপ্টেন স্পার্ক কিন্তু সেই সূত্রটা যে কতটা কাজে এসেছিল সেটা গল্প পড়লেই বোঝা যাবে।
এতদিন ফেলুদার সব গল্পে মাথা দিয়ে কাজ শেষ হলেও এই গল্পেই মনে হয় এরকম শ্বাসরুদ্ধকর ক্লাইমেক্স দেখা যায়।
পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ ঈদের ছুটিতে বাসায় গিয়ে পড়া। একটানে পড়ে ফেলতে একটুকুও খারাপ লাগেনি। -
বরাবরের মতই দারুণ, ক্লাসিক তবে ভিন্ন স্বাদের রহস্য। সেইসাথে অল্প একটু টুইস্ট আর লালমোহন গাঙ্গুলির হাস্যরস। এবার কিন্তু ফেলুদা, মগনলাল ফেইল মেরেছে লালমোহন ‘জটায়ু’ গাঙ্গুলির কাছে।
-
'If by a weapon you mean my revolver, no, I didn't bring it with me. But I've got all the other three, thank you'
(...) I knew that when Feluda mentioned three other weapons, he was simply referring to his powerful brain, steady nerves and strong muscles
What a great book! Mixed with suspense, mysteries and humour-it's a no brainer that Feluda is the Sherlock Holmes for all Bengali youths. Even though I didn't read the original text, it seems like this translation did its best to do the original justice because you could still get that Bengal-Indian vibe.
However, I think I spoiled my first Feluda experience by reading the 7th book as, even though it's not a continuation, first books usually set the scene for a series. Furthermore, I got really confused in the middle because there are MANY Bengal-Indian ish references which I didn't understand.
In conclusion, I'm going to read some of the other books most def in the future. I'd 100% recommend this to anyone. -
“চুরি বিদ্যা নো লংগার বর বিদ্যা” জটায়ু ডায়ালগ মেইড মাই ডে 😃 ,বেশ থ্রি্লং এনডিং ।
-
spoiler at your eye blink
“ফেলুদার জীবনে সবচেয়ে ধুরন্ধর ও সাংঘাতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে তাকে এই বেনারসেই লড়তে হয়েছিল। ও পরে বলেছিল-এই রকম একজন লোকের জন্যই অ্যাদ্দিন অপেক্ষা করছিলাম রে তোপসে। এ সব লোকের সঙ্গে লড়ে জিততে পারলে সেটা বেশ একটা ......"
মোটামুটি সকল গল্পেই এই রকম একটা প্যারা থাকে। সবগুলো গল্প না পড়ে তাই এখনই বলা যাবে না যে আসলেই মগনলাল সব চেয়ে সাংঘাতিক কিনা কিন্তু নিম্নোক্ত অনুচ্ছেদ টি আমার মনে হয়েছে বিগত দশ টা গল্পের মধ্যে সব চেয়ে কৌতুক প্রদ।
" লালমোহনবাবু খাতা বন্ধ করে বললেন, খুব খারাপ হচ্ছে এটা, জানেন তো? না পারছি আমার গল্প এগোতে, না পারছি আপনার কেসের সঙ্গে পাল্লা দিতে। এদিকেও একটু ছিটেফোটা ছাড়ুন। আমাদেরও তা ব্রেন বলে একটা জিনিস আছে। একটু খাটাবার সুযোগ দিন! কোনও আপত্তি নেই, ফেলুদা একটা ধোঁয়ার রিং ছেড়ে বলল, আপনাকে পাঁচটা সুতো দিচ্ছি, তা দিয়ে আপনি যত খুশি জাল বুনুন। সুতো? অ্যাফ্রিকার রাজা, শশীবাবুর সিং, হাঙরের মুখ, এক থেকে দশ, আর মগনলালের বজরা। লালমোহনবাবু কিছুক্ষণ ফেলুদার দিকে চেয়ে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, তার চেয়ে বললেই পারতেন চন্দ্ৰবিন্দুর চ, বেড়ালের তালব্য শ, আর রুমালের মা। সে বরং ঢের সহজ হত।"
" বারাণসীতে গত বৃহস্পতিবার এক সাধুবাবার আবির্ভাব শহরে বিশেষ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে বলে জানা গেল। অভয়চরণ চক্রবর্তী নামক বাঙালিটোলার জনৈক প্ৰবীণ বাসিন্দা কেদার ঘাটে প্রথম সাধুবাবার সাক্ষাৎ পান, এবং অচিরেই তাঁর অলৌকিক শক্তির পরিচয় পান। সাধুবাবা আপ��তত শ্ৰীচক্রবর্তীর গৃহেই অবস্থান করছেন। ভক্তগণের নিকট ইনি মছলি-বাবা নামে পরিচিত। তাঁরা বলেন, বাবাজী নাকি প্রয়াগ থেকে গঙ্গাবক্ষে ভাসমান অবস্থায় বারাণসীতে এসে পৌঁছেছেন।"
মছলি বাবা আসলে মগনলাল এর লোক। মুর্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য বেশ ধরে সাধু সেজেছিল। ঘোষাল বংশের এক মাত্র ছেলে রুকু ওরফে ক্যাপ্টেন স্পার্ক, গণেশের মুর্তিটাকে লুকিয়ে রেখেছিল দশমীতে বিসর্জন দেওয়ার মুর্তির মুখের ভিতর। কারণ মগনলাল যখন তার বাবার কাছে মুর্তিটা চেয়েছিল তা শুনতে পেয়েছিল রুকু। কল্পনা রাজ্যে বসবাসকারী রুকুর পরিকল্পনা ছিল, পানিতে ভাসানর পর গণেশ যাবে হাঙ্গর এর পেট এ আর ক্যাপ্টেন স্পার্ক সে হাঙ্গর হার্পুন দিয়ে হত্যা করে মুর্তি উদ্ধার করবে। সে তথ্য আবার রুকু জানিয়েছিল তার খেলার সঙ্গী শয়তান সিং কে (যে কিনা আসলে মগনলাল এর ছেলে) আর জানিয়েছিল বিকাশবাবুকে যে কিনা আসলে মুর্তি চুরির স্বপ্ন বোনা শুরু করে। মাঝখান থেকে সে স্বপ্ন ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ানর সম্ভাবনা তৈরি করে মুর্তি কারিগর শশীবাবু। স্বপ্ন ভঙ্গের মত গুরুতর অপরাধে তাই বিকাশ বাবুর ছুরিকাঘাতে তার মৃত্যু বরন করতে হয়। -
The 4th Feluda story I've read. So far, the best only because of that epic first interaction with you-know-who.
-
This is one of my most favourite among Feluda's adventures.
এই বইটায় ফেলুদার নেমেসিস মগনলাল মেঘরাজের আবির্ভাব। এ বইতে রহস্য সেরকম জমজমাট।
আমি খুব ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসি। বই পড়ার পরেই আমার ঘোরার নেশা। ছোট থেকে তিন গোয়েন্দা, ফেলুদা, শঙ্কু, টিনটিন আমার Travel bucket list এ যোগ করেছে বিভিন্ন মহাদেশের নানা জায়গা। দুই একটার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্তু মেলাগুলোই বাকি। কাশী, বেনারস নিয়ে বিভূতিভূষণ, শরৎচন্দ্র থেকে শুরু করে বাংলা সাহিত্যের হেন সাহিত্যিক নাই যিনি লেখেননি মনে হয়, কিন্তু 'বারানসী'র সবথেকে সুন্দর বর্ণনা আছে 'জয় বাবা ফেলুনাথ'-এ... স্বাদ, বর্ণ, গন্ধ, শব্দ মিলিয়ে।
বারানসীও যেতে হবে তাই। আমাকেও তোপসের মতো একটা লিস্ট করতে হবে দশাস্বমেধ ঘাটে কত রকম লোক কত কিছু করে তার। ১৩০ পর্যন্ত সত্যি পোঁছাতে পারি কিনা, দেখতে হবে।
রাবড়ি খেতেই হবে কৌচুরি লেনে, কারণ লালমোহনবাবু বলেছেন, "রাবড়ির আবিষ্কার টেলিফোন-টেলিগ্রাফের চেয়ে কম কীসে?" (কোলন slurp ইমো হবে এখানে)
ফেলুদা এই বইতে বড় বেশি ডেয়ারিং এবং তোপসে বিপদের সম্ভাবনা বুঝতে পেরে দাদার নিরাপত্তার জন্যে চিন্তিত, আবার একই সাথে উত্তেজিত কারণ দাদার ম্যান্দামারা হতাশ ভাব কাটছে... এ জিনিসটা আগে পড়ে খেয়াল হয়নি যতটা এবার লক্ষ্য করলাম। বয়সের সাথে সাথে একই বই যে ভিন্নরূপে ধরা দেয় তার প্রমাণ আবার পেলাম।
বইয়ের রহস্য দুর্দান্ত। রহস্য উম্মোচন সেরকম ক্লাইম্যাক্সের।
যারা এখনো না পড়েছে অতিসত্বর পড়ে ফেলা দরকার। আর আমার এখন সিনেমাটা দেখতেই হবে আবার। :D -
জয় বাবা ফেলুনাথ বইটা প্রকাশিত হয় সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে। কিন্তু প্রায় অর্ধশতবর্ষের বেশি সময় পার হয়ে যাবার পরেও এই গল্পগুলো কেন যেন কখনো পুরোনো হয় না। আর যতবার-ই পড়ি না কেন, এই গল্পগুলোর আবেদন একদম ঠিক প্রথমবারের মতই থাকে।
জয় বাবা ফেলুনাথের কাহিনী স্থান পেয়েছে বেনারসে। ফেলুদা-তোপসে-জটায়ু পূজার ছুটিতে বেড়াতে যায়। আর সেখানে দেখা হয় উমানাথ ঘোষাল আর তার পরিবারের সাথে। ঘোষাল পরিবারের একটি গণপতি মূর্তি খোয়া যাওয়ার ব্যাপারে ফেলুদার সাহায্য চায় উমানাথ ঘোষাল। এবং এরপর ঘটতে থাকে একের পর এক কাহিনী।
এই বইয়েই আমরা মগনলাল মেঘরাজের সাথে পরিচিত হই। এবং আমার মতে এই মেঘরাজ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সফল এক ভিলেন।
জয় বাবা ফেলুনাথের সবচাইতে আকর্ষণীয় দিক আমার কাছে লেগেছে বেনারসের বর্ণনা। মনে হয় যেন চোখের সামনে দেখছি। অবশ্য সত্যজিৎ রায় এই একটি কাজ খুব ভালো করে করতে জানতেন: নিজে জীবনে যেসব জায়গায় গেছেন, তাঁর ফেলুদার বইগুলোতে সেইসব জায়গার বর্ণনা উঠে আসতো একেবারে নিজের জবানীতে।
ফেলুদার যতগুলো উপন্যাস আছে, জয় বাবা ফেলুনাথ তার মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় বইগুলোর একটা। আপনি যদি এখনো পড়ে না থাকেন, তবে আপনি জানেন না আপনি কী ভীষণ রকমের একটা ভালো কাহিনী থেকে নিজেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন। -
এটা সম্ভবত আমার পড়া ফেলুদা'র সবচেয়ে রোমাঞ্চকর বই!
-
ফেলুদার সর্বপ্রিয় (?) প্রতিদ্বন্দ্বী মগনলাল মেঘরাজের আবির্ভাব এই বইয়ের মাধ্যমে। মগনলালের ব্যাপারে শুনেছি এর আগে এবং এই গল্পের শুরুতেই তার আগমনের বার্তা দিয়ে রাখেন সত্যজিত। বলতেই হবে নিরাশ করেননি। মগনলালের অধ্যায়টা খুব জমজমাট ছিল। শুধু একটা গল্পেই মগনলালকে শেষ করে না দিয়ে ভাল হয়েছে। সামনের দিকে আবার তার দেখা পাব।
কাশী/ভারানাসি যাওয়ার ইচ্ছে সেই ছোটবেলা থেকেই। তখন এক কারণে ছিল, এখন অন্য কারণে কিন্তু ইচ্ছেটা অবশ্যই আছে। পৃথিবীর সর্বপ্রাচীন শহর দেখার ইচ্ছে থাকবে না-ই বা কেন! সত্যজিতের বর্ণনা বেশ ভাল লেগেছে। একটা পুজো-পুজো ভাব ছিল পুরো বইটাতেই এবং পরিস্থিতির সাথে বেশ ভালভাবে ফুটিয়েও তুলেছেন।
আমার সবচেয়ে প্রিয় ফেলুদার গল্প না হলেও খুব উপভোগ করেছি বইটা। লেখকের নিজেরও মনে হয় অনেক প্রিয় গল্প ছিল এইটা। মুভিটাও এবেলায় দেখে নিব ভাবছি। -
শেষমেশ মগনলাল মেঘরাজের আগমণ! 🤦♀️
-
তপেশের ভাষ্যে, "ফেলুদার জীবনে সবচেয়ে ধুরন্ধর ও সাংঘাতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে তাকে এই বেনারসেই লড়তে হয়েছিল।" গোয়েন্দা গল্প ভালো হওয়ার জন্য খলচরিত্রকে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে শক্তিশালী হতে হয়। এগল্পে ফেলুদার সাথে দেখা হয় তার যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে।
বুঝেই গেছেন ফেলুদা এবার কাশীতে। একদম দুর্গাপুজোর সময়কার গল্প। পত্রিকায় 'মছলি বাবার' খবর পড়ে জটায়ু ওরফে লালমোহন গাঙ্গুলির অনুরোধে ফেলুদা যান বেনারস। সেখানে সাক্ষাৎ হয় উমানাথ ঘোষালের সাথে। জানিয়ে রাখা ভাল, ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি এখন সর্বজনবিদিত। কাশিতেও ছড়িয়ে পড়েছে তার নামডাক। সে সুবাদে উমানাথ তাকে একটা মুর্তি উদ্ধারের দায়িত্ব দেন, যেটা কিছুদিন আগে চুরি হয়েছে। উমানাথের বিশ্বাশ মূর্তির জন্যই তারা সকল বিপদ-আপদ থেকে বেঁচে রয়েছেন। উমানাথ জানান কিছুদিন আগে মগনলাল মেঘরাজ নামের একজন সেই মূর্তি কিনতে এসেছিলেন। মূর্তি বিক্রি না করায় সে তাকে হুমকি দেয় যে, যে কোন উপায়ে সে সেই মূর্তি করায়ত্ব করবেই।
তদন্তের শুরু থেকেই ফেলুদা বুঝতে পারেন তাদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। এরপর মগনলাল তাদের সরাসরি হুমকিই দিয়ে বসেন। এরই মধ্যে খুন হন ঘোষালদের পারিবারিক কারিগর। এসব মানসিক চাপে ফেলুদা বেশ বিদ্ধস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। একটা সময়ে তো মনে হয়েছিল, ফেলু মিত্তির বোধহয় ফেলই মারলেন এবার। কিন্তু ফেলুদার প্রধানতম অস্ত্র মস্তিষ্কের কাছে কি কোন রহস্য হার ন��� মেনে পারে।
জয় বাবা ফেলুনাথ! -
ফেলুদা কে নিয়ে যত কথা বলা হোক না কেন কম বলা হবে ।
জয় বাবা ফেলুনাথ সিনেমা দেখেছে যেমন অনেক মানুষ তেমন এই বই পরেনি, এমন মানুষও কম নয়। অনেক বছর আগেই পড়েছি এই বই কিন্তু কোনোদিন পুরোনো হবার নয়।
এই বই টি তে ফেলুদা, তোপসে ও লালামোহন বাবু কে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন কাশী তে ঘুরতে ।
কিন্তু কথায় বলে না " ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে" ? বা, "তুমি যাও বঙ্���ে, কপাল যায় সঙ্গে" ...। তাই হয়ছে ফেলুদার।
ঘুরতে গেলেও ঘটনা তার পিছু ছাড়েনা ।
একে একে ঘটনা আর প্রতিঘটনার মধ্য দিয়ে গল্পের সমাধান হয়। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই গল্পের মধ্য দিয়েই ফেলুদা তার সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে কঠোর "প্রতিদ্বন্দী" ,মগনলাল মেঘরাজ এর আত্মপ্রকাশ ঘটে ।
ঘটনা, লেখনী, সংলাপ, টুইস্ট সব মিলিয়ে আসলেই এই বই "জমজমাট" !
বইটি বেশিরভাগ মানুষেরই পড়া, শুরু থেকে শেষ সবার জানা। তবুও পড়তে গেলে বারবার প্রথম বারের মতোই উত্তেজনা অনুভব হবেই!
ফেলুদার ভাষায় যাকে বলে, এটিই সত্যজিৎ রায় এর "হাতের তার" ।
#শুভ_পড়াশোনা । -
বই(59)-জয় বাবা ফেলুনাথ
লেখক-সত্যজিৎ রায়
প্রকাশনা -আনন্দ পাবলিশার্স
এবারের ঘটনা কাশিতে ।উদ্দেশ্য ছিল বেনারস ঘুরে দেখা ।ফেলুদার সঙ্গে পরিচয় হয় ঘোষাল পরিবারের ।তাদের পুরনো ও দামী গণেশের মূর্তি চুরি হয়ে যায় ।কাজের দায়িত্ব পান ফেলুদা ।তাকে মুখোমুখি হতে হয় ভয়ানক মগনলালের সাথে।খুন হয় নিরীহ শশীবাবু। কে সে খুনী? ফেলুদা কি গণেশের মূর্তি কিংবা মূর্তি চোরকে ধরতে পারে ?জানতে হলে বইটি পড়ে ফেলুন ।
//বইয়ের চেয়ে সিনেমার শেষ অংশটা খুব ভাল ছিল। -
মহান শুক্কুরবার
সত্যজিৎ
আর ফেলু মিত্তির
তপ্ত তনুর তীব্র অনুরাগ মাথার শিরা উপশিরা দিয়ে যখন ঝাঁঝরা করে দেওয়া ব্যাথ্যার অনুভূতি দিয়ে যায়, সুস্থ না হই একটুখানি সুখী হতে তখন পথ্য রূপে ঔষধ গেলা ছাড়াও তোপসে জটায়ু আর মগনলাল মেঘরাজের ও বড্ড দরকার হয়।
রেটিং: 🌠⭐🌟✨.৭৫
১৫/১০/২২ -
'মগনলাল মেঘরাজ' নামটা বেশ সুন্দর।😴
-
ফেলুদা #11
কোথাও যেন নামটা আমার শোনা - ফেলুদার এক বড় প্রতিদ্বন্দ্বী মগনলাল মেঘরাজ । তখনও জানতাম না ফেলুদার কোন গল্পটায় এই মগনলাল আছে।
মাঝে বেশ কটা মাস বই পড়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম, আবার যখন নতুন করে শুরু করি তো ফেলুদা দিয়ে শুরু করি। যাই হোক এই গল্পেই পেয়ে গেলাম মগনলালকে। সাথে ইউটিউব থেকে সিনেমাটাও ডাউনলোড করে নিয়েছি, প্রথমে বইটা পড়বো তারপর সিনেমাটা দেখবো বলে।
এবার আসি গল্পটা কেমন সেই প্রসঙ্গে। গল্পের স্টোরিলাইন book description এ দেওয়া আছে, চেক করে নিতে পারেন। তবে একলাইনে বলতে গেলে এটা একটা মূর্তি চুরির কাহিনী।
গল্পের প্রেক্ষাপট হচ্ছে বেনারসে। বলা বাহুল্য এই জায়গাটা কম বেশি সবার পছন্দের। এখনকার যেসব বর্ণনা আছে আমার বেশ ভালো লেগেছে। রহস্য রোমাঞ্চ কার না ভালো লাগে, এই গল্পটাও বেশ জমজমাট, আমার তো ভালোই লেগেছে। মগনলালের সাথে ছিল মছলিবাবার রহস্য।গল্পটা পুজোর সময়ের ঘটনা, আর আমিও ঠিক পুজোর ১৪দিন আগে পড়লাম। যারা পড়েননি অবশ্যই পড়ে ফেলবেন। -
মিস্ট্রির বদলে থ্রিলার বলা চলে।তবে গল্পে ফেলুদার মাহাত্���্য বাড়িয়েছে ভিলেন মগনলাল মেঘরাজ।
-
আসলেই ফেলুদা’র বুদ্ধির কোন জবাব নেয় এতটা ঘোলাতে ঘটনার সমাধান করা আসলেই ছোট বিষয় নয়।
-
বহু কষ্টে শেষ করলাম 🥱।
প্রথমদিকে তেমনটা টানছিলো না, কিছু কিছু ব্যাপার আগে থেকেই আন্দাজ করতে পেরেছি। -
THIS! This is how you write a detective story - interesting plot, a decent number of characters with diverse motives and an intimidating arch-nemesis. Loved it!
-
I picked this book from a second hand book shop because I saw that it was written by the legendry Satyajit Ray. It's a short detective story which takes you through the city of Varnasi during the Durga Puja week where a precious idol of Ganesha goes missing from a wealthy businessman's house. The lead characters are the detective Feluda, his cousin Tapesh and his writer friend Lalmohan Babu. It follows a good plot, difficult for the reader to guess the culprit until the end and is a nice easy read.
-
আর কাজ কি আমার কাশী?
মায়ের পদতলে পড়ে আছে, গয়া গঙ্গা বারাণসী॥
হৃৎকমলে ধ্যানকালে, আনন্দসাগরে ভাসি।
ওরে কালীপদে কোকনদ, তীর্থ রাশি রাশি॥
লালমোহন বাবুর প্র রো চ না য় পুজো কাটাতে কাশীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন ফেলুদা আর তোপসে। তিনমাস ধরে হাতে কোন রহস্যের জট খোলার কাজ নেই ফেলুদার। লালমোহন বাবু ওরফে জটায়ুরও তেমনি মাথায় নেই নতুন গল্পের প্লট। ভ্রমণের খাতিরে যদি প্লট আর কেস মেলে তাহলে রথ দেখা, কলা বেচা দুই-ই হয়।
কাশী গিয়ে ফেলুদা বাহিনী দেখলো সেখানে আবির্ভাব ঘটেছে এক নতুন সাধকের। ❛মছলী বাবা❜ নামে বেশ প্রচার পেয়েছেন তিনি। কাশী তীর্থস্থান। সেখানে যেমন আছে ধর্ম, তেমনি আছে ধর্মের নামে ধুলো দেয়া লোকেদের আড্ডাখানা। এই মছলী বাবা কোন দলের?
কথায় আছে ❛ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে❜। তাই ফেলুদা বাহিনী কোথাও ঘুরতে গেছে সেখানে একটু ঘটনা ঘটবে না, তা আবার হয় না-কি? কাশীতে তিনমাসের অবসরের ইতি ঘটিয়ে পেয়ে গেলেন জমজমাট এক কেস। চু রি গেছে ঘোষাল পরিবারের শত বছরের ঐতিহ্য এক ❛গণেশ মূর্তি❜। সেই মূর্তির সন্ধান-ই করতে হবে ফেলুদাকে। বুদ্ধিটাকে শানিয়ে নেবার আরেকট��� অধ্যায়। তবে এবার ফেলুদার প্রতিপক্ষ যেন তেন কেউ নয়। নামে-ব দ নামে পরিচিত মগনলাল মেঘরাজ।
অনেক রহস্য, পদে পদে প্রাণের আ শ ঙ্কা আর হারিয়ে যাওয়া গণেশ মূর্তি। কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলুদা। শক্ত প্রতিপক্ষের সাথে পেরে উঠবে কি গোয়েন্দা ফেলুদা?
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
ছোটো কালের থ্রিলার পাঠের যাত্রার অন্যতম এক সঙ্গী ফেলুদা। প্রত্যেকবার নতুন রহস্য, চ্যালেঞ্জ আর বুদ্ধির পরীক্ষায় নিজের জাত চিনিয়ে দ��য়া ফেলুদা তো আমাদের সকলের প্রিয়।
তিনমাসের অবসর শেষে ফেলুদার নতুন রহস্য উন্মোচন পর্ব ছিল দারুণ। বেনারসের বর্ণনা, সেখানের কচুরি আর রাবড়ির স্বাদ যেন নিজেই অনুভব করতে পারছিলাম।
মগনলালের সাথে ফেলুদার টক্কর খ ল নায়ক হিসেবে তাকে একদম দারুণ মানিয়েছে। শেষের রহস্য উম্মোচন পর্বটা অসাধারন ছিল। ক্যাপ্টেন স্পার্ক নামের সেই ক্ষুদে চরিত্রটা মনে ধরেছে।
গণেশ মূর্তি নিয়ে ঘোষাল পরিবারের ইতিহাস আর সেই মূর্তিতে বিশ্বাস অবিশ্বাসের যে দোলাচল লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন সেটা বেশ ভালো লেগেছে। ৯৩ পৃষ্ঠার বইতে লেখক যথেষ্ঠ রহস্য আর থ্রিল রেখেছেন।
ফেলুদার রহস্য উন্মোচনের যে ধার, তার জন্য বলতেই হয়, ❛জয় বাবা ফেলুনাথ❜। -
বেনারস! ভারতীয়দের তীর্থস্থান। যেখানে ধর্ম, সেখানে ধর্ম ব্যবসায়ীদের আগমন নতুন কিছু নয়। ধর্মের নাম ভাঙিয়ে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তির খেলা চলে সেসব জায়গায়। যেখানে ধর্ম আছে, দেবতা তো থাকবেই। আর দেবতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে যায় এক অসুর চরিত্র। গোয়েন্দা কাহিনিতে ফেলুদা যদি হয়ে সেই দেবতা, তাহলে অসুর কে? তা ক্রমশ প্রকাশ্য।
🔎 কাহিনি সংক্ষেপ :
লালমোহন গাঙ্গুলি ওরফে জটায়ুর প্ররোচনায় তোপসেকে সাথে নিয়ে ছুটি কাটাতে বেনারসের উদ্দেশ্যে ফেলুদার যাত্রা। মছলিবাবার দর্শন নিতে জটায়ুর যেমন আগ্রহ, ঠিক ততটাই নিরাবেগ ফেলুদা। তবুও ছুটি কাটাতে তো যাওয়া যায়! দীর্ঘদিন হাতে কোনো কেস নেই। যা আসে, তাও ফেলুদার মনঃপুত হয় না। তাই নিজেকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করতে আর জটায়ুর আবেগকে প্রাধান্য দিতেই এই ভ্রমণ। সাথে যদি লালমোহন গাঙ্গুলি তার নতুন গল্পের প্লট পেয়ে যান, সেই সাথে কোনো কেস; তবে তো কথাই নেই।
কথায় আছে, "ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে"। ফেলুদার জন্য তা অক্ষরে অক্ষরে ঠিক। তাই তো, ফেলুদা যেখানেই যান, পিছুপিছু ছুটে আসে রহস্য। আর সেই রহস্যের পেছনে যে রোমাঞ্চকর কিছু ঘাপটি মেরে বসে আছে, তা বলাই বাহুল্য। বেনারসেও ফেলুদার কাছে এক কেস এলো। ঘোষাল বাড়ি থেকে চুরি হয়েছে একটি গণেশের মূর্তি। শত বছর ধরে মূর্তিটি সেই পরিবারে ছিল। পরিবারের বিশ্বাস, এই মূর্তিটির কারণেই তার ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য আলোর মুখ দেখেছে। কতটা বিশ্বাস আর কতটা অন্ধ বিশ্বাস, তা কে জানে? কেস নিলেন ফেলুদা। আর এই কেসের পেছনে ছুটতে গিয়েই ফেলুদা মুখোমুখি হলেন ভয়ংকর এক প্রতিপক্ষের। মগনলাল মেঘরাজ!
মগনলাল মেঘরাজের সাথে তো লড়াই চলছেই। সাথে রহস্য নিয়ে এসেছে মছলিবাবা। তিনি আসলে কে? সত্যি কি অনেক দূর থেকে পানিতে সাঁতার কেটে মাছের মতো বেনারসের তীরে ভিড়েছে? না-কি এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য আছে? কোন রহস্যের সমাধান কোন রহস্যে আছে, তা কে জানে?
🔎 পাঠ প্রতিক্রিয়া :
ফেলুদা নিয়ে বিশেষ করে কী বলব? সত্যজিৎ রায়ের অনবদ্য সৃষ্টি। বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দা চরিত্র একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। ফেলুদা চরিত্র তৈরি হয়েছিল বলেই বাংলার লাখ লাখ মানুষের থ্রিলার প্রেমে ডুবে গিয়েছিল। যার রেশ এখনো প্রকট। তরুণ সমাজ ফেলু মিত্তিরের সাথে কতবার গভীর রহস্যে হারিয়ে গিয়েছে তার হিসেব মেলানো সম্ভব নয়।
ফেলুদার অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস "জয় বাবা ফেলুনাথ"। ফেলুদা গল্পে কেবল রহস্য, রোমাঞ্চ এসে ভিড় করে না; এর সাথে মিশে থাকে সে অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য। "জয় বাবা ফেলুনাথ" গল্পটি চিত্রিত হয়েছে ভারতীয়দের তীর্থস্থান খ্যাত বেনারস তথা কাশীতে। দুর্গাপুজোর ছুটিতে কাশীর অল���গলি ঘুরে রহস্যের সমাধানে ছুটে চলেছে ফেলুদা।
"জয় বাবা ফেলুনাথ" উপন্যাসটি লেখা হয়েছিল সত্তর দশকের সময়টাতে। সে সময়ের বেনারসের চিত্র তুলে ধরেছেন লেখক। লেখকের ভাষায় ফেলুদার বয়ানে একটি জায়গার চিত্র মানসপটে চিত্রিত থাকে শুধু চোখ, কান দিয়েই নয়; নাকেরও যথাযথ ব্যবহার এক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। কীভাবে? তা জানতে উপন্যাসটি পড়তে হবে। লেখক যেভাবে বেনারসের বর্ণনা তুলে ধরেছেন, তাতে অন্য দেশে বসেই মনে হয় যেন চোখের সামনে দেখছি। এত সাবলীল বর্ণনা অনন্তকাল মনে গেঁথে থাকতে বাধ্য।
"জয় বাবা ফেলুনাথ" উপন্যাসটিতে লেখক রহস্য সৃষ্টি আর তা সমাধানে যথেষ্ট মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। সত্যজিৎ রায়ের মতো একজন লেখকের লেখা নিয়ে কথা বলার ধৃষ্টতা দেখানো আমার সাজে না। তবুও যদি "জয় বাবা ফেলুনাথ" নিয়ে বলতে-ই হয়, তবে আমি বেশ তৃপ্তি নিয়েই শেষ করেছি। এর প্রধান কারণ ছিল লেখকের রহস্য তৈরি করার ক্ষমতা ও তার জট ছাড়ানোর যোগ্যতা।
🔎 চরিত্রায়ন :
ফেলুদা চরিত্র নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে সবকিছু লক্ষ্য করা, নিজের বুদ্ধির উপর ভরসা রাখা আর অসীম সাহস ফেলুদাকে অমর করে রেখেছে। কোনো কিছুকেই ভয় পান না, খুব সহজে হার মানেন না। তবুও এই গল্পে এক সময় ফেলুদার মুখে 'গোয়েন্দাগিরি ছেড়ে দেবো' কথাটিও শোনা গেছে। আর না হয় শত্রুর বিনাশ করেই ছাড়বে। এমন দৃঢ়তা নিয়েই শত্রুর মোকাবেলা করেছেন বলে সবসময় জয়ী হতে পেরেছেন। সে যতই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হোক না কেন!
আর আছে তোপসে। তপেশ রঞ্জন মিত্র ফেলুদার খুড়তুতো ভাই। ফেলুদার সাথী। তার বয়ানেই আমরা ফেলুদার সমস্ত রহস্য জট ছাড়াতে দেখি। ফেলুদা নিজের হাতেই তৈরি করছেন তার ভাইকে। এছাড়াও লালমোহন গাঙ্গুলি ওরফে জটায়ু ছিলেন বলেই গল্পটা আরও প্রাণ পেয়েছে। নানান কাণ্ডে হাস্যরস তৈরি করা জটায়ুকে অন্য সবার চেয়ে আলাদা করেছে। আমার প্রিয় চরিত্র।
"জয় বাবা ফেলুনাথ"-এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় চরিত্র মগনলাল মেঘরাজ। এই চরিত্রটি-ই ফেলুদার অন্যান্য বই থেকে "জয় বাবা ফেলুনাথ"-কে আলাদা করেছে। গোয়েন্দা গল্পে খলনায়ক যতটা শক্তিশালী হবে, লড়াই ততটা জমজমাট। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ পেয়ে ফেলুদাও যেন নিজের বুদ্ধিতে শান দেওয়ার পরিমাণ বাড়িয়েছিলেন। এমন একজন ভয়ংকর অপরাধীর সাথে লড়ে জিততেই তো আনন্দ। ঠাণ্ডা মাথার অপরাধী মগনলাল মেঘরাজের ঠাণ্ডা মাথায় মানুষের স্নায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করার প্রবণতা ফেলুদা, তোপসে, বিশেষ করে জটায়ু খুব ভালো মতোই উপলব্ধি করতে পেরেছে। কীভাবে? তা যে বই পড়েই জানতে হয়! এক্ষেত্রে লেখকের কৃতিত্বও কম নয়। তিনি যেভাবে পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন, পড়ার সময় এখনো শিউরে উঠতে হয়।
এছাড়াও "জয় বাবা ফেলুনাথ" বইয়ে থাকা ছোটো বড়ো নানান চরিত্র ছিল স্বতন্ত্র, নিজ গুণে পারদর্শী। আমার বিশেষ পছন্দের ক্যাপ্তেন স্পার্ক, ওরফে রুকু। রহস্য রোমাঞ্চ গল্প একজন শিশুর মনে কেমন প্রভাব ফেলে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই রুকু। আমাদের জীবনেও তো কম প্রভাব নেই। ফেলুদা হোক বা অন্যান্য গোয়েন্দা চরিত্র; আমরাও সেই চরিত্রে নিজেদের কল্পনা করতে পছন্দ করি।
অন্যান্য চরিত্রগুলোও গল্পের প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একটি চরিত্র কীভাবে বিন্যাস করতে হয়, কীভাবে স্বকীয়তা বজায় রাখতে হয়, চরিত্র ভেদে সংলাপ বলার ভাষা কীভাবে পরিবর্তন হয়; তার অনেক কিছুই সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকে শেখার আছে। এ কারণেই তিনি সবার চেয়ে আলাদা।
🔎 ফেলুদা ও আমি :
আমার ছোটোবেলা থেকেই ফেলুদা প্রেম অনস্বীকার্য। আমি প্রচুর গোয়েন্দা কাহিনি, থ্রিলার কাহিনি পড়ে বড়ো হয়েছি। তার হাতেখড��ি এই ফেলুদা দিয়েই। একেকটা গল্প কতবার পড়েছি তার হিসেব করতে গেলে গরমিল লেগে যায়। তাই আজকাল হিসেব করা বাদ দিয়েছি। শুধু তৃপ্তি নিয়ে বারবার ডুবে যাই ফেলুদার সাথে কোনো এক রহস্যে। হোক না সে যতই পুরনো! আর এত এত গল্পের ভিড়ে আমার সবচেয়ে পছন্দের বই কোনটা? এই উত্তর ঠিক দিতে পারি না। সবগুলোই তো প্রিয়-এর তালিকায় আছে। তবে সবার উপরের নামটা যে "জয় বাবা ফেলুনাথ"-ই হবে তাতে কোনো সংশয় নেই।
🔎 পরিশেষে, ফেলুদা অমর সৃষ্টি। ভালোবাসার চরিত্র। আবেগের জায়গা। এমন চরিত্র তৈরির সত্যজিৎ রায়কে ধন্যবাদ দিলেও অনেক কম বলা হয়�� অনেক অনেক থ্রিলারের ভিড়ে ফেলুদার আবেদন, ভালোবাসা কিছু কমে না। লেখকের বর্ণনা, আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ডুবে গিয়ে মুগ্ধ হই বা শিউরে উঠি! ফেলুদা যুগ যুগ বেঁচে থাক আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের ভালোবাসায়।
বই : জয় বাবা ফেলুনাথ
লেখক : সত্যজিৎ রায়
প্রকাশনী : আনন্দ পাবলিশার্স
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৯৪
ব্যক্তিগত রেটিং : ৫/৫ -
Feluda has yet another case which brings him to the holy town of Benaras this time. The famous detective investigates the robbery of a priceless deity while on holiday in beautiful and mystic town. In many ways a story about stories, this clever thriller twists and turns its way to a stunning climax.
The story has all the thrills and details which we have seen in all Ray's books. It keeps us engrossed as always till last because the mystery finally unfolds at the end.
A movie was also made on this book which I am definitely going to watch now :-) -
ফেলুদার কালজয়ী কাহিনীগুলোকে আসলে র্যাংকিং করা যায় না। তবে সেরা কাহিনীগুলোর একদম শুরুর দিকে থাকবে "জয় বাবা ফেলুনাথ"। বেনারস এর ব্যাকগ্রাউন্ড, মগনলাল মেঘরাজ, দুর্গাপূজা, জটায়ুর এক্সপ্রেশন আর সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণ এক থ্রিলার।